প্রতিনিধি ফেনী

বৃষ্টিতে হাঁটু থেকে কোমরপানি জমেছে ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে। পানি মাড়িয়ে কলেজে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরাছবি: সুভাষ সূত্রধর নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক থেকে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

অতি  ভারী বৃষ্টিতে হাঁটুপানি জমেছে ফেনী শহরের বেশির ভাগ সড়কে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে বিপৎসীমার কাছাকাছি ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি। মুহুরী নদীর পাড় ভেঙে ফুলগাজী এলাকায় দুটি দোকান নদীতে বিলীন হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৩৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এটি চলতি বর্ষা মৌসুমে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আগামী দুই দিনও ফেনীতে মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

ফুলগাজী এলাকায় মুহুরী নদীর পাড় ভেঙে দুটি দোকান নদীতে | ছবি: স্থানীয় এক বাসিন্দার সৌজন্যে

বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনী শহরের কলেজ রোড, একাডেমি, কলাবাগান, হাসপাতাল মোড়, রামপুর শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠানবাড়ি, পেট্রোবাংলা, নাজির রোড, শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের কোথাও হাঁটুপানি জমেছে। কোথাও আবার কোমরসমান পানি। এতে দু-একটি রিকশা ছাড়া অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানি মাড়িয়ে কর্মস্থলসহ নানা গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষ। একইভাবে স্কুল ও কলেজে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

ফেনী কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী রাইসা আক্তারের সঙ্গে সড়কে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পুরো সড়ক ডুবে আছে। পানি মাড়িয়ে ভেজা কাপড়ে কলেজে যাচ্ছি। কলেজে পরীক্ষা থাকায় বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে।’ আবদুল জব্বার নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘পানি কোথাও কোথাও কোমর পর্যন্ত জমে আছে। এই অবস্থায় রিকশা নিয়ে যাত্রী পারাপার অনেক কষ্টের। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেশি।’

ফেনীর ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, গতকাল সোমবার রাত থেকে অতি বৃষ্টিতে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে গেছে। পানির স্রোতের তোড়ে এলাকার দুটি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ফুলগাজী-রাজেশপুর আঞ্চলিক সড়কটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় আজ সকাল থেকে যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন বলেন, অতি ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতা দূর করতে পৌরসভার কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে জমেছে হাঁটুপানি। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘জেলার সীমান্তবর্তী মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আজ দুপুর পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে উজানে ভারী বৃষ্টি হলে নদীর পানি আরও বাড়বে। ভাঙন রোধে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’