[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহীতে ‘মব সৃষ্টির’ অভিযোগে সাবেক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি রাজশাহী

যুবলীগের এক নেতাকে ধরতে ভবনটি ঘেরাও করেছিলেন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীরা। বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরের পদ্মা পারিজাত এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাকে ধরার নামে বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে ‘মব তৈরি করে’ লুটপাটের অভিযোগে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে নগরের চন্দ্রিমা থানায় মামলটি করেন বড় ভাইয়ের শাশুড়ি হাবিবা আক্তার। গত বুধবার নগরের পদ্মা পারিজাত এলাকার একটি আটতলা ভবনে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ওই নেতার নাম মাহমুদ হাসান ওরফে শিশিল। তিনি রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি। মামলায় মাহমুদ হাসানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে নগরের পদ্মা পারিজাত এলাকার একটি আটতলা ভবন ঘেরাও করেন স্থানীয় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীরা। ঘেরাওয়ের পর পুলিশ যাওয়ার আগেই কেউ কেউ ওপরে উঠে গিয়ে ছয় তলার একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালান। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয়। নেতা–কর্মীরা দাবি করতে থাকেন, এই ভবনেই আছেন নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি।

তবে অনেক আগেই তিনি দেশত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তাঁকে ধরার এই ‘অভিযানের’ খবর ফেসবুকে দেখে তৌরিদ আল মাসুদ ঘটনাস্থলে থাকা জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকারকে ফোন করেন। ফোনে তিনি তাঁকে বলেন, এত কষ্ট করে লাভ নেই। তিনি আছেন অনেক দূরে। সময় হলে নিজেই আসবেন। তারপর অবশ্য যুবলীগ নেতাকে ধরার ওই অভিযান শেষ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ওই ফ্ল্যাটমালিকের স্ত্রী হাবিবা আক্তার অভিযোগ তুলেছেন, বাড়ি ঘেরাও করে ‘মব’ সৃষ্টি করে তাঁকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি থাকেন আটতলা ভবনের ষষ্ঠতলার ফ্ল্যাটে। যাঁরা তাঁর ফ্ল্যাটের ভেতরে ঢুকেছিলেন, তাঁরা লুটপাটও চালিয়েছেন। তাঁর বাসা থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও ১২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার লুট হয়েছে বলে তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনেও করবেন।

শুক্রবার বিকেলে হাবিবা আক্তার বলেন, তাঁর জামাতা মেহেদী হাসান সিজারের আপন ছোট ভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহমুদ হাসান। সম্পদের বণ্টন নিয়ে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ আছে। মেহেদীকে মারধর করতে আগের রাতেও লোকজন নিয়ে শালবাগানের একটি ভবন ঘেরাও করেছিলেন মাহমুদ। বুধবার শ্বশুরবাড়িতে থাকতে পারেন, এমন সন্দেহে ভয় দেখাতে ‘মব’ সৃষ্টি করা হয়েছিল। ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে যুবলীগ নেতাকে ধরার অভিযান বলে প্রচার করা হয়।

মেহেদী হাসানও একই অভিযোগ করে বলেন, ‘যুবলীগ নেতা-টেতা কোনো বিষয় না। প্রকৃতপক্ষে মব তৈরি করে তারা আমাদের ভয় দেখাতে চাইছিল। এর নেপথ্যে আমারই ভাই।’

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদ হাসান মুঠোফোনে বলেন, যখন যুবলীগ নেতাকে ধরতে অভিযান চলে, তখন সেখানে নেতা–কর্মী ছাড়াও পুলিশ ও সাংবাদিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁর বড় ভাইয়ের শাশুড়ি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। তিনি কাউকে ফ্ল্যাটে ঢুকতেই দেননি।

মাহমুদ হাসান আরও বলেন, ‘আমার ভাই আওয়ামী লীগ আমলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে অনেক ফাইন্যান্স করেছে। তিনি বড় ব্যবসায়ী, তাঁর অনেক টাকা। আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করেছে। তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।’ যুবলীগ নেতাকে ধরার জন্যই এই অভিযান চালানো হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, ভাইয়ের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, সেটা তাঁর পারিবারিক ব্যাপার।

মামলার তথ্য নিশ্চিত করে চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘বাড়ি ঘেরাও এবং ভেতরে ঢুকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন