[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ছেলেকে আনতে গিয়ে বাবা আহত, বিধ্বস্ত বিমানের একটি অংশ লাগে বুকে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল হোসেন। গতকাল সোমবার রাতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ে সূর্য সময়। শিশুটি স্কুলের ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষার্থী।

গতকাল সোমবার সূর্যর স্কুল ছুটি হওয়ার কথা ছিল বেলা একটায়। তাকে আনতে স্কুলে গিয়েছিলেন বাবা মুকুল হোসেন। তিনি স্কুল প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির একটি দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায় স্কুল ভবনে। এ ঘটনায় মুকুল আহত হন।

মুকুল বর্তমানে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সিয়েরা লিওনের এরিয়া ম্যানেজার। তাঁর স্ত্রী শারমিন ইসলাম। তিনি মাইলস্টোন কলেজের একই ব্রাঞ্চের জীববিজ্ঞানের প্রভাষক। ঘটনার সময় শারমিন তাঁর কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন।

হঠাৎ জোরে আওয়াজ করে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় বলে জানান শারমিন। তিনি গতকাল রাতে বলেন, বিমানের পাখার একটি অংশ এসে লাগে তাঁর স্বামী মুকুলের বুকে। এখন তাঁর বুকের ক্ষতের চিকিৎসা চলছে। তাঁর অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ার সমস্যাও আছে।

শারমিন বলেন, ‘আমাদের সন্তানকে নেওয়ার জন্যই আমার স্বামী স্কুলে গিয়েছিল। আমি পাশের ভবনে ক্লাস নিচ্ছিলাম। বিকট আওয়াজ শোনার পর সবাই নিচে নেমে আসি। কিন্তু কেউ ভাবেনি, এটা বিমান দুর্ঘটনা।’

বিমান বিধ্বস্তের পর চারদিকে আগুন ও ধোঁয়া দেখতে পান শারমিন। তিনি খেয়াল করেন, তাঁর ছেলের ক্লাস যে ভবনে, সেখানেই বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এরপর তিনি স্বামী মুকুলকে খুঁজে পান।

শারমিন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর আমার স্বামীকে আহত অবস্থায় দেখতে পাই। তাঁর বুক থেকে রক্ত ঝরছিল। কিন্তু তখনো সন্তানকে খুঁজে না পাওয়ায় আমরা দিশাহারা ছিলাম। ভবনের মূল ফটকে আগুন থাকায় উদ্ধারকারীরা দুই পাশের গ্রিল কেটে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা শুরু করেন। অনেককেই ঝলসানো অবস্থায় দেখতে পাই।’

কিছুক্ষণ পর অপরিচিত একটি নম্বর থেকে সন্তান সূর্য ফোন দেয় বলে জানান শারমিন। এই মা বলেন, সূর্য ফোন দিয়ে বলে, সে সুস্থ। বাংলা মিডিয়ামের ভবনে আছে।

একপর্যায়ে শারমিন ছেলেকে উদ্ধার করেন। সে সময় ছেলে সূর্যর চুল পোড়া, ডান হাত কিছুটা আগুনে ঝলসানো ছিল। মা-বাবাকে দেখেই তাঁদের জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে সূর্য বলতে থাকে, ‘আমি বেঁচে আছি, তোমরা বেঁচে আছ?’

প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সূর্য বাসায় গেছে। এ ঘটনায় পুরো পরিবার বিপর্যস্ত, আতঙ্কগ্রস্ত বলে জানান শারমিন।

বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের নিহত হওয়ার তথ্য জানা গেছে। আহত দেড় শতাধিক। হতাহতের ঘটনায় আজ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন