সংবাদদাতা বগুড়া

গ্রেপ্তারের পর ডিবির হেফাজতে শামিম রহমান। বগুড়া জেলা পুলিশ কার্যালয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এসএসসি পাস করার পর আর লেখাপড়ার ধারেকাছেও যাননি। তবু পরিচয় দিতেন ব্যারিস্টার হিসেবে। শুধু তাই নয়, নিজেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চাচাতো ভাই বলেও দাবি করতেন। এই পরিচয় দিয়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে বিভিন্ন পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একের পর এক প্রতারণা করে গেছেন বগুড়ার শামিম রহমান (৩৩)। শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ধরা পড়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর থেকে শামিমকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া জেলা পুলিশের ডিবি সদস্যরা। এর আগে বুধবার বগুড়া সদর থানায় হারুন অর রশিদ নামে এক ব্যক্তি প্রতারণার অভিযোগে লিখিত অভিযোগ করেন।

শামিম বগুড়া শহরের নিশিন্দারা কারবালা মহল্লার বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম মৃত লিলু মিয়া।

আজ দুপুরে বগুড়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান এসব তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, কিছুদিন আগে ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ইমরান হোসেন ও গোলাম রব্বানী নামের দুই যুবকের সঙ্গে শামিমের পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও ব্যারিস্টার পরিচয় দিয়ে তাঁদের যুবদলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

গত ২২ জুন শামিম মোবাইলে ডেকে নিয়ে ইমরান ও রব্বানীকে বগুড়ার মমইন এলাকার একটি কফিশপে বসান। সেখানে ইমরানকে কেন্দ্রীয় যুবদলে পদ দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ এবং রব্বানীকে জেলা যুবদলে পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ১ লাখ টাকা চান। তখন ইমরান ৩০ হাজার এবং রব্বানী ২০ হাজার টাকা দেন নগদ।

তবে পরে তথ্য যাচাই করে তাঁরা বুঝতে পারেন—তারেক রহমানের কোনো চাচাতো ভাই নামে শামিম নামে কেউ নেই। প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে হারুন অর রশিদ থানায় অভিযোগ করেন। এরপরই ডিবি তদন্তে নামে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে উত্তরা থেকে শামিমকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ বলছে, শামিম এসএসসি পাসের পর আর লেখাপড়া করেননি। ব্যারিস্টার পরিচয়ের কোনো বৈধ কাগজপত্র তাঁর নেই। শুধু রাজনৈতিক নেতাদের নয়, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও পদ বা বদলির আশ্বাস দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সিমকার্ড, দুটি মোবাইল ফোন, চারটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও নিজের নামে ১০টি স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনার পর সকালেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিকেলে তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান।