প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ
![]() |
সেলিনা হায়াৎ আইভী | ফাইল ছবি |
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শ্রমিক সজল মিয়া (২০) হত্যা মামলায় সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ছাড়া ফতুল্লা থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঈনউদ্দিন কাদিরের আদালতে শুনানি শেষে সেলিনা হায়াতের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে ভার্চ্যুয়াল যুক্ত হয়ে শুনানিতে অংশ নেন সেলিনা হায়াৎ।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান বলেন, হত্যা মামলায় আইভীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ফতুল্লা মডেল থানার অপর একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় আইভীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সেলিনা হায়াতের আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, ‘এজাহারে নাম শ্রেণিভুক্ত ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। কে গুলি করেছে, কার নেতৃত্বে গুলি করা হয়েছে—এগুলো এজাহার বলা আছে। শুধু হয়রানি করার জন্য ও প্রতিপক্ষ শত্রুতার কারণে তাঁকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর ও জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’
নিহত সজল সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার হাসান আলী ও রুনা বেগম দম্পতির ছেলে। এ ঘটনায় রুনা বেগম বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, সেলিনা হায়াৎসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে সেলিনা হায়াতের নাম ৬ নম্বরে।
মামলার এজাহার বাদী উল্লেখ করেছেন, গত বছরের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের সামনে অবস্থানরত ছাত্র-জনতাকে প্রতিহত করতে আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ ভীতির সৃষ্টি ও এলোপাথাড়ি গুলি করাসহ মারধর করে গুরুতর জখম করে। বাদীর ছেলে জুতা কারখানার শ্রমিক সজল ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে আসামিদের ছোড়া গুলিতে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। তাঁকে উদ্ধার করে সুগন্ধ্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
গত ৯ মে ভোরে নারায়ণঞ্জ শহরের দেওভোগের বাড়ি থেকে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁকে গত বছরের ২০ জুলাই পোশাককর্মী মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরকসহ মোট ৬টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে সেলিনা হায়াৎ কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আছেন।