প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
চিকিৎসায় এআইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজশাহীতে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের রিজিওনাল সামার সামিট। শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কায়সার রহমান মিলনায়তনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
চিকিৎসায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ভবিষ্যৎ নিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের ‘রিজিওনাল সামার সামিট’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাইছার রহমান মিলনায়তনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে এআইয়ের একটা বিরাট ভূমিকা থাকবে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ জাওয়াদুল হক। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ফারুক আহম্মেদ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের রাজশাহীর সদস্যসচিব মোহাম্মদ আখতারুল ইসলাম।
রোগনির্ণয়ে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ময়মনসিংহের কমিউনিটি বেইজড মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক সাইয়েদুর রহমান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আজিজুল হক আজাদ ও ঢাকার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট আরিফুল বাশার।
সম্মেলনে প্রবন্ধ ও অন্য বক্তাদের কথায় উঠে আসে, এআই চিকিৎসকদের জন্য একটা পরিপূরক ব্যবস্থা হবে। যন্ত্রকে যদি আগে থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, অসংখ্য বইপত্র, মেডিকেল জার্নাল ইনপুট দেওয়া যায়, তাহলে সেসব পড়ে সেখান থেকে একটা উত্তর দিতে পারবে এআই। একটা জটিল রোগীর কেস হিস্ট্রি দিলে সে তা বিশ্লেষণ করে রোগনির্ণয় করে দিতে পারবে। পরবর্তী ব্যবস্থাপত্র কী হতে পারে, সে ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারে। এই ক্ষমতা এআইয়ের ইতিমধ্যে হয়েছে। তাকে যদি একটা ছবি, একটা এক্স-রে ফিল্ম, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান ফিল্ম দেওয়া যায়, সে রোগনির্ণয় করে দিতে পারবে। ভবিষ্যতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে এআইয়ের একটা বিরাট ভূমিকা থাকবে।
এআইয়ের ভুল করার আশঙ্কা নিয়ে বক্তারা বলেন, চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ওপর নির্ভর করবে এআইয়ের ভুল করার মাত্রা। চিকিৎসকেরা এমন তথ্য এআইকে দিলেন, যিনি দিচ্ছেন, তাঁর হয়তো এটা পক্ষপাত আছে। তখন এআই তার মতো করে তথ্য দেবে। যেমন চীনের বিশেষজ্ঞরা একটা এআই হাসপাতাল করেছে, সেটার সফলতার হার ৯৩ শতাংশ। তার মানে ৭ শতাংশ ভুল করছে। এই যে ভুলের হার ধীরে ধীরে কমে আসবে। যত দিন যাবে, তত বেশি তথ্য তাঁরা এআইকে দিতে পারবেন, তখন তত বেশি হালনাগাদ হবে এআই। তবে এ জন্য সব সময় তার পাশে মানুষকে লাগবে। মানুষকে তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বক্তারা বলেন, ইতিমধ্যে তাঁরা অনেক উদাহরণ পেয়েছেন। যেমন একটা এআই আছে, যার কাজ হচ্ছে মানুষের শরীরের ক্ষত আছে কি না, সে সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া; কিন্তু কয়েক জায়গায় এআই অকৃতকার্য হয়েছে। এই মুহূর্তে একটা অ্যাপ আছে, যে ক্যানসার রোগীদের কেমোথেরাপি ব্যাপারে পরামর্শ দেয়। কয়েকটি জায়গায় সে ভুল করেছে। যেহেতু দক্ষ মানুষ তাকে পর্যবেক্ষণ করছিল, তাঁরা সেটা ধরে ফেলেছেন। যত দিন যাবে, এই ভুলের মাত্রা ধীরে ধীরে কমে আসবে। ভবিষ্যতে মানুষ ও এআই মিলে একটা সুপার ফিজিশিয়ান তৈরি করা যাবে বলে বক্তারা আশা করেন।