প্রতিনিধি পটুয়াখালী
![]() |
অবরুদ্ধ নুরকে সাহায্য করতে আসে সেনাবাহিনী | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া |
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নুরুল হক ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে অভিযোগ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
জানা গেছে, রাতে বকুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া এলাকায় আয়োজিত এক স্মরণসভায় অংশ নিয়ে ফেরার পথে অবরুদ্ধ হন নুরুল হক। এর ঘণ্টা তিনেকের মাথায় সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তবে রাত দেড়টার দিকে নুরুল হক ফেসবুকে দেওয়া আরেকটি পোস্টে তখনো অবরুদ্ধ থাকার কথা জানান। নুরুল হক লেখেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে ‘সন্ত্রাসীদের’ রাস্তা থেকে হটাতে পারেনি।
শুরুতে দেওয়া পোস্টে নুরুল হক লিখেছেন, ‘গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা রাস্তায় গাছ ফেলে গুলতি, রড, রামদা নিয়ে আমাদের পথ রোধ করেছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় কয়েকজনকে মারধর করে দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেছে।’
পরে সেখান থেকে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় নুরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপায় গণসংযোগ কর্মসূচি হিসেবে কালারাজা বাজারে একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন এবং কুমারখালী বাজারে একটি পথসভায় অংশ নেন তিনি। রাত ১০টার দিকে তাঁর দলীয় কর্মী প্রয়াত বাদল মেম্বারের স্মরণসভায় অংশ নিয়ে গলাচিপার উদ্দেশে রওনা হন।
এ সময় পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের অনুসারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁর পথ রোধ করেন, দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। তখনই তিনি জেলা পুলিশ সুপার ও গলাচিপা থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন বলেও জানান নুরুল হক।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা হাসান মামুন বলেন, নুরুল হক নূর এলাকায় উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি গত বুধবার প্রকাশ্যে একটি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে জেলা বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার চরবিশ্বাস বাজারে তাঁর লোকজন বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এসব উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে এলাকার লোকজন নুরুল হকের ওপর ক্ষিপ্ত হতে পারেন।
হাসান মামুন আরও বলেন, ‘আমি এখন ঢাকায় আছি। এসব ঘটনা ফেসবুকে দেখেছি। ভিপি নুরের অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি জেনে তাঁকে উদ্ধারের জন্য আমি সেনাবহিনী ও পুলিশ-প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছি। আমি চাই, গলাচিপা উপজেলার পরিবেশ শান্ত ও সুশৃঙ্খল থাকুক।’
পরবর্তী সময়ে নুরুল হকের সঙ্গে থাকা গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল আমীন মুঠোফোনে জানান, সেনাবাহিনী আর পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানিয়ে নুরুল হকসহ তাঁদের গলাচিপা ছেড়ে পটুয়াখালী জেলা শহরে চলে যেতে অনুরোধ জানানো হয়। তবে তাঁরা গলাচিপা ডাকবাংলোয় রাতে থাকার জন্য রওনা হয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।