প্রতিনিধি পঞ্চগড়

বিদায়ের দিনে ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বাড়ি ফেরেন প্রধান শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

শেষ কর্মদিবসে প্রধান শিক্ষককে বিদায় জানাতে ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীরা। ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়, ছিল লালগালিচা, মালা পরানো আর করতালিতে ভেসে যাওয়া এক আবেগঘন মুহূর্ত।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে পঞ্চগড় বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এই আয়োজন করা হয়। অবসরে যাওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহকে সম্মান জানাতে শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন করে।

বিদ্যালয়ের মূল ভবন থেকে ফটক পর্যন্ত বিছানো হয় লালগালিচা। দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মো. ছায়ফুল্লাহ মাঠে এসে সবাইকে উদ্দেশ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে তাঁকে ফুলের মালা পরানো হয় এবং করতালির মধ্য দিয়ে লালগালিচা দিয়ে ফটকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তিনি ফুলে সাজানো ঘোড়ার গাড়িতে উঠে বসেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁকে শোভাযাত্রা করে শহরের কায়েতপাড়া এলাকার বাসায় পৌঁছে দেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মো. ছায়ফুল্লাহ ১৯৯১ সালের ২৫ মে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) হিসেবে যোগ দেন। পরে বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকার পর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০২৩ সালের ১৪ মে থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বিকেলে মো. ছায়ফুল্লাহর শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি শ্রেণি থেকে তাঁকে একটি করে ক্রেস্ট তুলে দেয়। এ সময় বিদ্যালয়ের স্কাউট সদস্যরা তাঁকে স্কাউট সালাম দেয়। পরে তাঁকে ফুলের মালা পরিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের কায়েতপাড়া এলাকার বাসায় পৌঁছে দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিদায়ের মুহূর্তে আবেগাপ্লুত মো. ছায়ফুল্লাহ বলেন, ‘জানি আমার ছাত্ররা আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আজকের এই আয়োজন প্রমাণ করেছে, তারা আমাকে কতটা ভালোবাসে। আজ আমার শিক্ষকতা জীবনকে সার্থক মনে হচ্ছে।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছায়ফুল্লাহ স্যার ছিলেন ছাত্র ও সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তাঁর ন্যায়নীতি ও আদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’