প্রতিনিধি পাবনা
![]() |
পাবনার বেড়ায় কাজীরহাট উচ্চবিদ্যালয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পাবনার বেড়া উপজেলার কাজীরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের এক গ্রন্থাগারিকসহ প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাদের বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে এটিকে ‘গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ’ বা ‘ম্যাস হিস্টিরিয়া’ বলে মনে করছেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এতে আতঙ্কের কিছু নেই।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার দুপুরে সাতজন ছাত্রী একইভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবলেও আজ সকাল থেকে হঠাৎ অসুস্থতার সংখ্যা বাড়তে থাকে। এদিন ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আঙিনায় ঢোকার পর থেকেই অসুস্থতা বোধ করে। অ্যাসেম্বলি চলাকালে কয়েকজন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শ্রেণিকক্ষে গিয়ে আরও অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
অভিভাবকেরা খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কাশিনাথপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে। অনেকে বাড়িতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের ওষুধের দোকান ও ক্লিনিকে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন বলে, ‘ক্লাসে ঢোকার পর মাথা ঘুরছিল, বমি বমি লাগছিল। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এখন কিছুটা ভালো লাগছে।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘রোববার কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হলে বিষয়টি গুরুত্ব দিইনি। ভেবেছিলাম খাবার না খাওয়ার কারণে হয়েছে। কিন্তু সোমবার একে একে ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী জ্ঞান হারালে আমরা দ্রুত চিকিৎসাব্যবস্থা নিই।’
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে সহায়তা করে। আমাদের কাছে শ্রেণিকক্ষগুলো কিছুটা অপরিচ্ছন্ন মনে হয়েছে।’
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাহমিনা সুলতানা বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং তিনজন ভর্তি হয়েছিল। তারা এখন অনেকটাই সুস্থ। আমরা প্রাথমিকভাবে এটিকে ম্যাস হিস্টিরিয়া বলে ধারণা করছি। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’