প্রতিনিধি পঞ্চগড়

মরদেহ উদ্ধার | প্রতীকী ছবি

প্রায় দুই বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সন্তানদের বাড়িতে রেখে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন বাদশা মিয়া (৩৯)। সেখানে বিয়ে করে ফুটপাতে একটি দোকান চালাতেন তিনি। এক মাস আগে বাড়িতে এসে মা–বাবা আর সন্তানদের দেখে আবারও ঢাকায় যান তিনি। তবে আজ রোববার সকালে বাড়ির পাশের সুপারিবাগানে পড়ে ছিল তাঁর লাশ।

মৃত বাদশা মিয়ার বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আরাজী শিকারপুর-কাটাবাড়ি এলাকায়। তাঁর প্রথম সংসারের দুই ছেলে এক মেয়ে তাদের দাদা–দাদির কাছে থাকে। প্রায় দেড় বছর আগে মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন তিনি।

পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনসুর আলী খান বলেন, বাদশা মিয়া একসময় নিজের এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করতেন। দুই বছর আগে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর ছেলেমেয়েদের দাদা–দাদির কাছে রেখে ঢাকায় চলে যান বাদশা। ঢাকায় আবার বিয়ে করে ফুটপাতে ছোট্ট একটা দোকান চালাতেন বাদশা। এক মাস আগে বাড়িতে এসে দুই দিন থেকে আবারও ঢাকায় চলে যান। তবে রোববার সকালে হঠাৎ করে বাড়ির পাশে সুপারিবাগানে তাঁকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দেন পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।

ঘটনাটি জানাজানি হলে সেখানে লাশ দেখতে ভিড় করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে বোদা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা যায়, লাশ পড়ে থাকার স্থান থেকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাত দূরে ‘মামা-ভাগিনা দিঘির’ পাড়ে বাদশা মিয়ার মুঠোফোন, কিছু শুকনা ও তরল কীটনাশক, একটি কলার কিছু অংশ, একটি পাউরুটির কিছু অংশ এবং একটি মিষ্টি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া লাশের পাশে পড়ে থাকা একটি ব্যাগে কিছু কাপড়চোপড় ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।

নিহত বাদশা মিয়ার মামা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি সকাল সাতটার দিকে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির বাইরে যাওয়ার পর সুপারিবাগানের দিকে কাপড়ের মতো কিছু দেখি। একটু এগিয়ে মানুষের মতো একজন শুয়ে থাকতে দেখে বাড়ির অন্য লোকদের ডাকাডাকি করি। পরে অন্যরা গিয়ে দেখে এটা বাদশা মিয়া। সে ঢাকায় ছিল। বাড়িতে আমরা কেউ জানি না সে এসেছে।’

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন বলেন, লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক সুরতহালে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে লাশের মুখে কীটনাশকের গন্ধ ছিল। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলার প্রক্রিয়া চলছে।