[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

আসামে সরকারি স্কুলের শিক্ষককে বাংলাদেশে পুশ ইন করল ভারত

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি নয়াদিল্লি

কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ঠেলে পাঠানোকে কেন্দ্র করে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল । গত মঙ্গলবার সকালে রৌমারী সীমান্তের বড়াইবাড়ি এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

নাগরিকত্ব নিয়ে মামলা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন হলেও আসাম রাজ্যের এক সরকারি স্কুলের সাবেক শিক্ষককে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খায়রুল ইসলাম নামের ৫১ বছর বয়সী ওই সাবেক স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী ও কন্যা এই অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশি নাগরিক ‘দাগিয়ে’ এভাবে জবরদস্তি ‘পুশ ব্যাক’ নীতির বিরোধিতা করে আসামের বিরোধী দল এআইইউডিএফের এক প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সঙ্গে দেখা করে ‘পুশ ব্যাকের মাধ্যমে অমানবিক আচরণ’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

ভারতের জাতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ওই প্রতিনিধিদলের নেতা বিধায়ক আমিনুল ইসলামের অভিযোগ, তাঁর নির্বাচনী এলাকা থেকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার ১৪ জনকে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হলেও বাংলাদেশ তাদের গ্রহণ করেনি। ফলে তাঁরা নো ম্যানস ল্যান্ডে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন। এই আচরণ অমানবিক।

খায়রুল ইসলাম নাগরিকত্ব মামলায় জড়িত। ২০১৬ সালে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করার পর তিনি রায়ের বিরুদ্ধে গুয়াহাটি হাইকোর্টে মামলা করেন। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন। এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন, বিদেশি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে যাঁরা দুই বছরের বেশি কারাগারে রয়েছেন, তাঁদের জামিনে মুক্তি দিতে হবে। সেই রায়ের পর খায়রুল জামিন পান।

খায়রুলের আইনজীবী অভিজিৎ রায় গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাটি এখনো সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। শেষ শুনানি হয়েছিল ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মক্কেলকে জবরদস্তি পুশ ব্যাক করা হয়েছে। রাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ শুধু বেআইনিই নয়, অসাংবিধানিকও।

খায়রুলের স্ত্রী রীতা খানম ও কন্যা আফরিন জানিয়েছেন, খায়রুলের এ অবস্থা তাঁরা জানতে পারেন ২৭ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড হওয়া এক ভিডিও থেকে। ওই ভিডিওতে এক বাংলাদেশি সাংবাদিক দাবি করেন, খায়রুল ইসলাম বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার বড়াইবাড়ি সীমান্তের কাছে রয়েছেন।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, খায়রুল তাঁর পরিচয় জানিয়ে বলছেন, তিনি মরিগাঁও জেলার খান্দা পুখুরি গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক।

রীতা খানম ও আফরিনের অভিযোগ, ২৩ মে পুলিশ খায়রুলকে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘বিদেশি’ বলে চিহ্নিত ব্যক্তিদের রাখার জন্য তৈরি মাটিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে। সেখান থেকে ২৭ মে হাত-পা ও চোখ বেঁধে তাঁকে একটি বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য।

এআইইউডিএফের প্রতিনিধিরা রাজ্যপালকে বলেছেন, এভাবে বহু মানুষকে রাজ্যে আটক করা হচ্ছে। পুশ ব্যাক করা হচ্ছে। রাজ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

খায়রুল ইসলামের বর্তমান অবস্থান ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ নিয়ে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বা রাজ্য সরকার এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

এর আগে গত মঙ্গলবার বিএসএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ২৭ মে আসামের দক্ষিণ সালমারা-মানকাচর সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন বাংলাদেশের কিছু নাগরিক। বিএসএফ চ্যালেঞ্জ জানালে তাঁরা ফিরে যান। বিএসএফের ওই বিবৃতিতে অবশ্য খায়রুল ইসলামের নাম বা তাঁর অবস্থান নিয়ে কিছু ছিল না।

দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, পেহেলগামের ঘটনার পর রাজধানী দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মোট ৪৭০ জনকে ‘বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করে সে দেশে পাঠানো হয়েছে। গত ছয় মাসে এভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৭৭০ জনকে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন