প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ

শাহরিয়ার আলম সাম্য | ছবি: শাহরিয়ারের ফেসবুক থেকে নেওয়া

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বুধবার রাত ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল হাফিজিয়া মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সড়াতৈল জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

এর আগে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে শাহরিয়ার আলমের মরদেহ বহনকারী গাড়ি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ সময় সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজন, প্রতিবেশীসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ তাঁকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে সেখানে ভিড় করেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। এরপর রাত ১০টার পর সড়াতৈল হাফিজিয়া মাদ্রাসা মাঠে সাম্যর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার আগে শাহরিয়ার আলমের ছোট চাচা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি, মেধাবী শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ, আমাদের কাছে সেই ছোটবেলা থেকেই সাম্যরা চার ভাই বড় হয়েছে। আমি জানি, কোনো সময় কোনো কারণে নিজে আঘাত পেলেও সাম্য কাউকে আঘাত দিত না।’

জানাজায় অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ছত্রদল নেতা শাহরিয়ার মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, অন্তর্বর্তী সরকার ও পুলিশ প্রশাসন তাঁকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তাঁরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছেন। প্রশাসন এতে ব্যর্থ হলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করতে বাধ্য হবেন।

জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান, ঢাবি শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আবুবক্কার সিদ্দিক, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম, বেলকুচি উপজেলা জামায়াতের আমির আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার নিহত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় শাহরিয়ারের বড় ভাই এস এ এম শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।

ডিএমপি বলছে, থানা-পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন আসামি তামিম, সম্রাট ও পলাশের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।