নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ‘বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা: প্রেক্ষিত মানবিক করিডর’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ৩১ মে ২০২৫ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
মিয়ানমারকে কোনো করিডর বা চ্যানেল দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে ফ্রন্টলাইনের (যুদ্ধের) দিকে নিয়ে যাবেন না। আমাদের অস্তিত্বের ব্যাপার এখানে। আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপার এখানে।’
বিষয়টির সঙ্গে দেশের স্থিতিশীলতার বিষয় জড়িত উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আপনি (দেশকে) এত বড় ঝুঁকির দিকে নিয়ে গিয়ে কী অ্যাচিভ (অর্জন) করার চেষ্টা করছেন?’
‘বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা: প্রেক্ষিত মানবিক করিডর’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে আমীর খসরু এসব কথা বলেন। শনিবার বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এই বৈঠকের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যানালিসিস।
করিডর বেশ বিতর্কিত হয়ে গেলে সরকারের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে চ্যানেল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বলেও দাবি করেন আমীর খসরু। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চ্যানেল আর করিডরের মধ্যে ‘ট্যাকটিক্যাল ডিফারেন্স’ (কৌশলগত পার্থক্য) আছে।
করিডর বা চ্যানেল দেওয়ার আলোচনা এখনো অব্যাহত আছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই যে কাতারে আলোচনা হয়েছে, এটা তো আমরা জানি। মানে এই পুরো বিষয়টার মধ্যে এত গোপনীয়তার কী আছে, সেটি আমি বুঝতে পারি না।’
করিডর দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না বলেও মন্তব্য করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেছেন যে চিফ অ্যাডভাইজার (প্রধান উপদেষ্টা) সাহেব বলুক আসলে বিষয়টা কী। এই বিষয়টা শেষ করতে হবে। আমরা কিন্তু এখনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না যে, এই বিষয়টা শেষ হয়ে গেছে।’
মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাষ্ট্রীয় কোনো পক্ষ নয় (নন-স্টেট অ্যাক্টর) উল্লেখ করে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতা বলেন, করিডর দেওয়া হলে সার্বভৌম দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক ও অন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।
মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের মতো শক্তিধর রাষ্ট্রের স্বার্থ রয়েছে বলে মনে করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ‘ওয়ার (যুদ্ধ) চলছে, আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) ওই সিচুয়েশনের (অবস্থার) মধ্যে এখন করিডরের প্রশ্নটা আনছেন।’
করিডর দিলে আরাকান আর্মির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাবে— সরকারের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য প্রশ্ন রাখেন, করিডর দিয়ে রোহিঙ্গাদের কেন ফেরত দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া তাঁদের নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার। আইনিভাবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে হবে; সম্মানের সঙ্গে তাঁরা যাবে। এটাই হতে হবে বাংলাদেশের অবস্থান।