[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

সুরমা নদীর এপার ভাঙছে, ওপারও ভাঙছে, যমুনা অয়েলের ডিপো ঝুঁকিতে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি সিলেট

সিলেট নগরের দক্ষিণ অংশে খোজারখলা এলাকায় নদীর পার ভাঙছে। এর কয়েক হাত দূরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সিলেট ডিপো | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

সিলেট নগরকে উত্তর ও দক্ষিণ—দুই ভাগে বিভক্ত করেছে সুরমা নদী। কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে নগরের বিভিন্ন অংশে নদীর দুই পারই ভাঙছে। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পার উপচে পানি ঢুকে বন্যাও দেখা দিচ্ছে। এবার বর্ষা আসার আগেই শুরু হয়েছে নদীভাঙন। এ অবস্থায় শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি উঠেছে।

ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজন বলছেন, নগরের উত্তর অংশে কালীঘাট আমজাদ আলী রোড গাঙপার এবং দক্ষিণ অংশে খোজারখলা এলাকায় চলতি বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এতে উভয় অংশে বাসাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়েছে। এ ছাড়া নগরের কুশিঘাট এলাকায় নদীর উভয় পারই ক্রমাগত ভাঙছে। অন্যান্য বছর এ তিনটি এলাকায় নদীভাঙন থাকলেও চলতি বছর ভাঙনের তীব্রতা বেশি।

আমজাদ আলী রোড গাঙপার এলাকার পাশেই মাছিমপুর এলাকা। ওই এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ (২৪) সোবহানীঘাট সবজি বাজারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। গত বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আমজাদ আলী রোড গাঙপারের নদীভাঙনকবলিত এলাকায় দাঁড়িয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১০ থেকে ১৫ দিন আগে ভাঙন শুরু হইছে। প্রথমে ফাটা দিছে। পরে লায় লায় (ধীরে ধীরে) পার ভাঙছে। এখন প্রতিদিন ভাঙতাছে।’

সিলেটে সুরমা নদীর এপার–ওপার দুপারই ভাঙছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

সরেজমিন দেখা যায়, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে এখন নদীভর্তি পানি। সেই সঙ্গে আছে তীব্র স্রোত। আমজাদ আলী রোডের নদীর পারের অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ গজ অংশে নতুন করে এবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। আশপাশের বাসাবাড়ি ও স্থাপনা থেকে অন্তত ৭ থেকে ১০ হাত দূরেই নদীর পার ভাঙছে। এতে ঝুঁকির মুখে আছে অন্তত ১০টি বাসা ও পাকা দালান।

খোজারখলা এলাকায় নদীর পার ভাঙছে। এর কয়েক হাত দূরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (জেওসিএল) সিলেট ডিপো। নদীভাঙন ঠেকাতে ও ডিপো রক্ষায় ভাঙনকবলিত অংশে বেশ কিছু জিওব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলা হয়েছে।

সিলেট নগরের কালীঘাট এলাকায় সুরমা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে আছে ওয়াকওয়ে ও নদী তীরের স্থাপনা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের ‘স্বাধীন পরিচালক’ সালেহ আহমদ খসরু বলেন, ‘নদীভাঙনের খবর পেয়ে স্থানটি পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দেখতে পাই। নদীভাঙনের কারণে পুরো জেটিই হুমকির মুখে পড়েছে। তাই তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পাউবো ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজও শুরু করেছে। তবে এখানে স্থায়ী ব্লক বসানো প্রয়োজন।’

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে প্রতি বর্ষায় ধারাবাহিকভাবে নদীভাঙনের পাশাপাশি সুরমা নদীর পানি উপচে বন্যা দেখা দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে সুরমা নদীর নগর অংশের অনেক স্থান নাব্যতা হারালেও খনন হয়নি। তাই বন্যার সমস্যা দূর করতে নদী খননের পাশাপাশি নগরের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। শহর রক্ষা বাঁধ নির্মিত হলে নদীভাঙন ঠেকানোর পাশাপাশি বন্যাও অনেকটা রোধ করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, কুশিঘাট এলাকায় নদীভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাউবোকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে। আমজাদ আলী রোড ও খোজারখলা এলাকায়ও একই উদ্যোগ নিতে পাউবোকে বলা হবে। এ ছাড়া ভাঙন ও বন্যা ঠেকাতে স্থায়ীভাবে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের আছে।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, নদীভাঙনে খোজারখলা এলাকায় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সিলেট ডিপোটি ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ এ স্থাপনা রক্ষায় নদীভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে আলী আমজাদ রোড ও কুশিঘাট এলাকায়ও দ্রুততার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন