প্রতিনিধি নোয়াখালী

লাশ দেখতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন। আজ দুপুরে নোয়াখালী সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের দুর্গানগর গ্রামে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় পরিত্যক্ত একটি সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের দুর্গানগর গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার হয়। পেশায় দোকান কর্মচারী ওই যুবক গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

নিহত যুবকের নাম মীর হোসেন (৩২)। তিনি পার্শ্ববর্তী বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় রাজগঞ্জ বাজারের সোলেমান ট্রেডার্স নামের একটি রড-সিমেন্টের দোকানে চাকরি করতেন মীর হোসেন।

মীর হোসেন | ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় মীর হোসেন গ্রামের বাড়ি থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হন। রাত ৯টার দিকে তিনি স্ত্রীকে মুঠোফোনে জানান, পরিচিত এক ব্যক্তির জানাজায় যাচ্ছেন, সেখান থেকে ফিরতে এক-দেড় ঘণ্টা সময় লাগবে। এরপর মীর হোসেনের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে মীর হোসেনের সন্ধান না পেয়ে তাঁর স্ত্রী বেগমগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী ছয়ানী এলাকার একটি সড়কের ওপর নিখোঁজ মীর হোসেনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর আজ সকালে পাশের একটি ধানের স্তূপে রক্ত দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। এর সূত্র ধরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন অদূরে থাকা পরিত্যক্ত একটি সেপটিক ট্যাংকে পলিথিন মোড়ানো বস্তু দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ পলিথিন খুলে লাশটি দেখতে পায়।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে মীর হোসেনের সন্ধানে অভিযান চালায়। এর মধ্যেই আজ লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। মীর হোসেনের গলা, কপালসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের রক্তাক্ত জখম রয়েছে।

নিহত মীর হোসেন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সম্প্রতি তিনি স্থানীয় যুবদলের পদ পেতে তৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য কামাল হোসেন ওরফে জাহিদ বলেন, নিহত মীর হোসেন এলাকায় শান্ত প্রকৃতির ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনা এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে।

সদর উপজেলার সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের বলেন, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।