[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটকে রাজনীতিমুক্ত করার দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার বিকেলে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এক ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা  মঙ্গলবার বিকেলে ক্যাম্পাস রাজনীতিমুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। ক্যাম্পাস রাজনীতিমুক্ত করতে না পারলে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়েছেন তাঁরা।

এর আগে দুপুরে ছাত্রদলের কর্মীরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়। এতে নারী শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং তাঁদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার আন্দোলনে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা শাখা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও হেনস্তার শিকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেন। ওই মিছিলের ভিডিও ধারণ করে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল হিসেবে প্রচারের অপচেষ্টা চালান প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলকর্মী আবদুর রহমান (সাব্বির)। এই অপপ্রচার নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়। এর জের ধরে আজ আবদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল বহিরাগত শিক্ষার্থী ইনস্টিটিউটের একাধিক নারী শিক্ষার্থীর ওপর চড়াও হন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে, হত্যার হুমকি দেন এবং শারীরিকভাবে আঘাত করার চেষ্টা চালান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী জান্নাতুল তহুরা (তন্বী) বলেন, ‘সোমবার নারী নির্যাতন ও ধর্ষণবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিল ছাত্রদল নিজেদের বলে ফেসবুকে প্রচার করলে আমি প্রতিবাদ জানাই। পরে রাতে সাব্বিরকে ওই ভিডিও পোস্ট ডিলিট করতে বলায় সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, “তুমি গাইবান্ধার মেয়ে। গাইবান্ধায় গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্রগিরি করো। কুড়িগ্রামে তোমার কোনো ঠাঁই নাই।” পরে আজ আমি এর বিচার চাইতে অধ্যক্ষ স্যারের কাছে যাই, কিন্তু স্যারকে না পেয়ে কয়েকজন মেয়েসহ ক্যাম্পাসে অপেক্ষা করতে থাকি। এ সময় সাব্বির ছয় থেকে সাতজন বহিরাগত ছাত্রদলের ছেলেকে নিয়ে আমাকে মারার জন্য আমার কাছাকাছি চলে আসে, বলে “মেয়ে হওয়ায় গায়ে হাত তুললাম না। ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে বাইরে আয় তোদের হাসপাতাল যাওয়ার মতো অবস্থা রাখবো না”।’

আবদুর রহমান কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কনস্ট্রাকশন বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই নারী শিক্ষার্থীদের ওপর আমরা কোনো ধরনের হামলা করিনি। এমনকি শারীরিকভাবে হেনস্তার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটি সঠিক নয়। বরং ওই নারী শিক্ষার্থীরা আমাদের ছাত্রদল নিয়ে নানান ধরনের খারাপ ভাষা ব্যবহার করেছেন। আমার মা-বাবা নিয়েও গালিগালাজ করেছেন। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। আপনারা চাইলে যাচাই করে দেখতে পারেন। আমরা তাঁদের কিছুই করিনি।’

এ বিষয়ে জানতে কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. তাইজুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার মুখ্য সংগঠক সাদিকুর রহমান বলেন, ‘দেশের বর্তমান বাস্তবতায় যখন নারীরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সংগ্রাম করছে। তখন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদের এভাবে হেনস্তা করা এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’

ঘটনার বিষয়টি নজরে আনা হলে ছাত্রদলের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি আমিমুল ইহসান বলেন, ‘কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আমাদের ছাত্রদলের কোনো কমিটি নেই। এ ছাড়া আবদুর রহমান সাব্বির নামে যে ছেলেটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকেও আমি ঠিকমতো চিনতে পারছি না। খোঁজ নিয়ে জানাতে পারবো সে ছাত্রদলের কেউ কি না। তবে ছাত্রদলের কোনো কর্মী হয়ে কাউকে হত্যার হুমকি বা কারও ওপর হামলা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন