[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

সাকিবের র‍্যাঙ্কিং রাজত্বের অবসান

প্রকাশঃ
অ+ অ-

খেলা ডেস্ক

আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে সাকিবের রাজত্বের দিন এখন অতীত | এএফপি

ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এ সপ্তাহেও র‍্যাঙ্কিং হালনাগাদ করেছে আইসিসি। ব্যতিক্রম কিছু না ঘটলে বা বড় কোনো টুর্নামেন্ট চলমান না থাকলে প্রতি বুধবারই দল ও খেলোয়াড়দের র‍্যাঙ্কিং হালনাগাদ করা হয়ে থাকে। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতো ‘র‍্যাঙ্কিং-ধারাবাহিকতা’ ছিল সাকিব আল হাসানেরও। আলাদাভাবে ব্যাটিং, বোলিংয়ে যা-ই থাকুক, সপ্তাহ শেষের অলরাউন্ডার র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষেই থাকত বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটারের নাম। তা–ও দু-চার সপ্তাহ বা চার-ছয় মাস নয়, বছরের পর বছর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর স্থানটা ছিল সাকিবের জন্য ‘বরাদ্দ’।

তবে সেই দিন এখন অতীত। তা–ও এতটাই যে আইসিসির ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে নামই নেই সাকিবের। অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে খেলে টেস্ট থেকে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন। পরিবর্তিত বাস্তবতায় সেটা না হলেও টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে সাকিবের নাম ঠিকই আছে। তবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সাকিব নেই, অলরাউন্ডার হিসেবে দীর্ঘদিন শীর্ষে ছিলেন এ দুই সংস্করণেই।

সাধারণত, একজন খেলোয়াড়ের নাম র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রবেশ করে কয়েকটি মানদণ্ড বিবেচনায়। যে মানদণ্ডের পুরো কাজটাই হয় অ্যালগরিদমের ভিত্তিতে, মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই। র‍্যাঙ্কিংয়ে ফুটে ওঠে একজন খেলোয়াড় সমসাময়িক অন্যদের তুলনায় কোথায় অবস্থান করছেন। ১ নম্বরে থাকা মানে সবার চেয়ে ভালো। এই ১ নম্বর বা ১০০ নম্বর নির্ণয়ে অনুসরণ করা হয় কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম। শুধু ব্যাট হাতে কত রান বা বল হাতে উইকেটই নয়, বিবেচনায় নেওয়া হয় ওই রান বা উইকেট ম্যাচের কোন পরিস্থিতিতে এসেছে আর প্রতিপক্ষ দলের শক্তিমত্তা কেমন ছিল।

একজন ক্রিকেটার পারফরম্যান্স দিয়ে যেমন র‍্যাঙ্কিং তালিকায় প্রবেশ করে শীর্ষে উঠে যেতে পারেন, আবার খারাপ খেলার কারণে পেছাতে পেছাতে তলানিতেও চলে যেতে পারেন। কিন্তু সাকিবের নাম তো ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের কোথাওই নেই। বোঝাই যাচ্ছে, বাদ পড়ে গেছেন।

আইসিসি র‍্যাঙ্কিং থেকে একজন খেলোয়াড় বাদ পড়তে পারেন মোটাদাগে তিনটি কারণে। একটি নিষেধাজ্ঞা বা বহিষ্কার। যেমন ২০১৯ সালের নভেম্বরে জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় সাকিবকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা (এক বছর স্থগিত) দিয়েছিল আইসিসি। ওই সময় র‍্যাঙ্কিং থেকে সাকিবের নাম বাদ পড়েছিল। এর বাইরে আর কখনোই র‍্যাঙ্কিং থেকে ছিটকে যেতে হয়নি তাঁকে।

বরং ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত টানা চারবার বছর শেষের ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বরে ছিলেন সাকিব। ৫০ ওভার ক্রিকেটে ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩ সালেও বছর শেষের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ছিল তাঁর নাম। মাঝখানে ২০১৪ বাদ দিয়ে পরে যে ধারাবাহিকতা দেখা গেছে ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও। সব মিলিয়ে দেড় যুগের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ওয়ানডেতে ১১ বারই শীর্ষ অলরাউন্ডার হিসেবে বছর শেষ করেছেন সাকিব।

টি-টোয়েন্টিতেও দাপটের ছবিটা কাছাকাছিই। ২০১৪, ২০১৫, ২০১৭-এর পর ২০২২ ও ২০২৩ সাল শেষ করেছেন ১ নম্বর অলরাউন্ডার হিসেবে। এই র‍্যাঙ্কিং-রাজত্বের মধ্যেই ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—তিন সংস্করণেই শীর্ষ অলরাউন্ডার হওয়ার রেকর্ড গড়েন সাকিব।

রান ও উইকেটসংখ্যায় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার এখন শুধু টেস্টের র‍্যাঙ্কিংয়ে আছেন। যে সংস্করণে সর্বশেষ খেলেছেন সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে। সেই টেস্টের পর বাংলাদেশ দল ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে, দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছে টেস্ট। আর সর্বশেষ এ মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছে ওয়ানডে সিরিজ। এসবের কোনোটিতেই ছিলেন না সাকিব। তাহলে টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে না থাকলেও ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে সাকিব কেন নেই?

র‍্যাঙ্কিং থেকে বাদ পড়ার বড় কারণগুলোর একটি অবসর গ্রহণ। সেপ্টেম্বরে কানপুর টেস্টের আগেই সংবাদ সম্মেলন করে সাকিব বলেছিলেন, জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই এই সংস্করণের শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন। ২০ ওভারের ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে আর দেখছেন না বলায় সেটিই আদতে ‘অবসরের ঘোষণা’ হয়ে গেছে। আর অবসর নেওয়াতেই টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিং থেকে সাকিবের নাম কাটা পড়েছে।

তবে সাকিব কিন্তু ওয়ানডে থেকে অবসর নেননি। বলেছিলেন, ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে ৫০ ওভার ক্রিকেট থেকে বিদায় নেবেন। তাহলে এই সংস্করণের র‍্যাঙ্কিংয়ে কেন নেই? এখানেই আসছে তৃতীয় কারণ—দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি। র‍্যাঙ্কিংয়ের মূলমন্ত্রই হচ্ছে বর্তমানকে ফুটিয়ে তোলা। একজন খেলোয়াড়ের পুরোনো পারফরম্যান্সের চেয়ে নতুন পারফরম্যান্সকেই বেশি বিবেচনায় নেওয়া হয়। টেস্টের বেলায় র‍্যাঙ্কিংয়ের জন্য ১২-১৫ মাস সময় বিবেচনায় নেওয়া হয়। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রে এটি ৯ থেকে ১২ মাস। এর বেশি সময় কেউ না খেললে র‍্যাঙ্কিং থেকে নাম সরিয়ে ফেলা হয়। ওয়ানডেতে সাকিবের নাম কাটা পড়েছে এখানেই। এই সংস্করণে তিনি সর্বশেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এক বছর পেরিয়ে যাওয়ায় সাকিবের নামটা তাই র‍্যাঙ্কিংয়েই নেই। যদিও সর্বশেষ ওয়ানডে খেলার সময়ও তাঁর নাম ছিল ১ নম্বরেই!

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন