[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ভিকারুননিসা, মনিপুরের মতো নামী স্কুলও ফলাফলে পিছিয়ে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল জানতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসেন অভিভাবকেরা। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা, ১২ মে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মোশতাক আহমেদ: ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল ২ হাজার ১৯৫ ছাত্রী। তাদের মধ্যে ফলাফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫২৮ জন; যা ৭০ শতাংশের কিছু বেশি। গতবারের চেয়ে সংখ্যায় ও শতাংশের হিসাবে তা বেশ কম। গতবার এই বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৬৫৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। শুধু জিপিএ-৫ নয়, পাসের হারও গতবার এবং করোনার আগের দুই বছরের চেয়ে এবার কম।

গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে কথা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার ফল তুলনামূলক খারাপ হয়েছে। তাঁর দাবি, অনেক ছাত্রী ঠিকমতো ক্লাসে আসতে চায় না, অনেকের আবার মুঠোফোনে আসক্তি আছে। ৮৫ শতাংশের উপস্থিতির ভিত্তিতে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও নানা কারণে ছাড় দিতে হয়।

বিদ্যালয়ের মূল ফটকে এক অভিভাবক বলেন, তাঁর দুই মেয়ে এখানে পড়ে। কিন্তু বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার অবস্থা আগের মতো ভালো নয়। তাঁর দাবি, এখন এই বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের ভালো করার জন্য অভিভাবকদের ভূমিকা অনেক। কারণ, অভিভাবকেরা সন্তানদের কোচিং–প্রাইভেটের মাধ্যমে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করেন।

ঢাকায় অবস্থিত পরিচিত ১৫টি বিদ্যালয়ের ফলাফলের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কোনো কোনোটির ফল এবার তুলনামূলক ‘খারাপ’ হয়েছে। তবে এই ১৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে বেশির ভাগের ফল তুলনামূলক ভালো হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর সাতটি বিদ্যালয়ে পাসের হার ৯৯ শতাংশের ওপরে, এর মধ্যে চারটির পাসের হার শতভাগ।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পরিচালনা কমিটি বা অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়ে যে বিদ্যালয়গুলোতে নানামুখী সমস্যা বিরাজ করছে, সেগুলোর ফল খারাপ হয়েছে।

গত রোববার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার প্রায় ৮৪ শতাংশ। এবার ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯ হাজার ১৯০ পরীক্ষার্থী; যা গতবারের চেয়ে তিন হাজারের বেশি।

রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অবস্থিত মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে একসময় ভালো ফল হতো। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিদ্যালয়ের ফল খারাপ হচ্ছে। যেমন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১৭০ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এই বিদ্যালয়ের মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ শতাংশের কিছু বেশি। এই বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল ৩ হাজার ৭৫৭ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৩৩৭ জন। গতবারও এই বিদ্যালয়ের ফল তুলনামূলকভাবে খারাপ হয়েছিল। অথচ ২০১৮ সালেও এই বিদ্যালয় থেকে যত শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল, তার মধ্যে প্রায় ৭২ শতাংশ জিপিএ–৫ পেয়েছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে বেশ কিছুদিন ধরেই নানামুখী সমস্যা চলছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সংকট এতটাই বেশি যে মামলা-মোকদ্দমাসহ নানা রকমের ঘটনা ঘটে চলেছে। এখনো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি।

অন্য স্কুলের ফলাফল কেমন
মতিঝিলে অবস্থিত আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার পরীক্ষা দিয়েছিল ২ হাজার ৪১১ জন। পাসের হার প্রায় শতভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৯৫৬ শিক্ষার্থী। রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ৭৮০ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৫৮ জন এবং পাসের হার শতভাগ। হলি ক্রস বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২৩১ জন পরীক্ষা দিয়ে ২৩০ জন পাস করেছে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮৫ জন। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে ৫৬১ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে সবাই। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪০৫ জন। সরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় থেকে ৩১৪ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬৯ জন।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ১৩টি জেলা। এই বোর্ডের ফলাফলের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঢাকা মহানগর শহরাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ফল তুলনামূলকভাবে বেশি ভালো। বিপরীতে শরীয়তপুরসহ কয়েকটি জেলার ফলাফল তুলনামূলক পিছিয়ে আছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন