[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

ফিরে আসা লোড শেডিংয়ে নাজেহাল ঈশ্বরদীর জীবন

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ঈশ্বরদীতে ঘন ঘন লোড শেডিংয়ে আবার ভুগতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় শহরের বাবুপাড়া এলাকার একটি মুদি দোকানে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে অন্ধকার দূর করার চেষ্টা। শনিবার রাতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে দুই মাসের শিশু ইয়াসির। মা তানজিলা ইসলামের ধারণা, লোড শেডিংয়ের কারণেই তার সন্তান জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।

পাবনার ঈশ্বরদী শহরের বাবুপাড়া এলাকায় এখন প্রতিদিন ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও ঠাণ্ডা-জ্বরে ভুগছি। আমার শ্বাশুড়ি বিদ্যুৎ চলে গেলে ঘেমে অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে লোড শেডিংয়ে অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবার।

প্রচণ্ড রোদে খোলা মাঠে ধান কাটতে গিয়ে কিছুক্ষণ পরপর হাঁপিয়ে উঠছেন কৃষক। ঘামে ভিজে একাকার তাঁরা। এ অবস্থায় পানি খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছেন এক কৃষক | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

ঈশ্বরদী শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার এমন পরিস্থিতি অনেক বছর ধরেই তারা দেখছেন না। আবার ফিরে আসা এই সঙ্কটে খাপ খাওয়াতে সমস্যা হচ্ছে।

মশুড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী আলতাফ হোসেন জানান, শনিবার রাতে ২-৩ বার বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল। বাসায় বয়স্ক মা আছে। বাচ্চারা আছে। ওদের বেশি কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মায়ের ডায়াবেটিস, হাইপ্রেসার। এ পরিস্থিতির সাথে অভ্যস্ত না অনেক বছর। সেজন্য সমস্যা বেশি হচ্ছে। সরকারের কথা শুনে মনে হচ্ছে সমস্যাটা আরও চলবে।

বাধ্য হয়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে চার্জার ফ্যান কিনেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এমনিতেই সবকিছুর দাম বেশি। এর মধ্যে আরেকটা খরচ করতে হল। কিন্তু এখন তো অত্যধিক গরম চলছে, এছাড়া তো উপায়ও ছিল না।

এই এলাকার আরেক বাসিন্দা ফারুক আহমেদ জানান, তীব্র গরমে তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে বেশি ভুগতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, দিনেও কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে গেছে। গরমটা তো এই সিজনে অসহ্য। বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে রান্না করতেও কষ্ট করতে হচ্ছে।

স্কুলপাড়া এলাকায় ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে জানিয়ে সেখানকার বাসিন্দা তানভীর হোসেন বলেন, এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে তো এক ঘন্টা থাকে না। একেবারে রুটিন করে যাচ্ছে। বাচ্চারা গরমে পড়তে পারছে না। আমার মা হার্টের রোগী, ঘেমে তার ঠাণ্ডা লেগে গেছে। এতদিন তো আইপিএসের প্রয়োজন হয়নি। এখন ভাবছি, আইপিএস ছাড়া চলতে পারব না। আগে তো বাঁচতে হবে।

প্রচণ্ড দাবদাহে সড়কের পাশেই চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে নিচ্ছেন এক রিকশাচালক | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

সাঁড়া গোপালপুরের বাসিন্দা ফরিদা ইসলাম জানান, আট ঘণ্টায় তার বাসায় চার বার বিদ্যুৎ চলে গেছে।

এই স্কুল শিক্ষক বলেন, ৩৫-৪০ মিনিট করে বিদ্যুৎ থাকছে না। আমার ফ্রিজের সব খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাছ-মাংসও গলে যাচ্ছে। খুব খারাপ অবস্থা। এমনটা চলতে থাকলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

এই এলাকার আরেক বাসিন্দা আফরোজা ইসলাম জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় পানির সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। সময়মতো পানি পাচ্ছি না। পানি আসছে কম। বিদ্যুৎ না থাকায় মটরে পানি তুলতে পারছি না ঠিকমত। দুই দিন খুব পানির সঙ্কট ছিল। আজকে সেটা কমেছে। ল্যাপটপ-মোবাইল ফোন চার্জেও সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। আর গরমের কষ্ট তো আছেই।

এই এলাকার একটি বহুতল ভবনের ২ তলায় ভাড়া থাকেন বেসরকারি চাকরীজীবী তোফাজ্জল হোসেন। বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় আইপিএস দিয়েও পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

পাতিলাখালিতে বিভিন্ন শ্রেণির বাচ্চাদের বাসায় গিয়ে পড়ান জাহানারা ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা ছোট থাকতে মনে আছে, খুব লোড শেডিং হত। কিন্তু ৭-৮ বছরে লোড শেডিং কী- একবারেই ভুলে গেছিলাম। এখন দিনে কয়েকবার করে বিদ্যুৎ না থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে এক সময় স্কুলে শিক্ষকতা করা জাহানারা বলেন, দেখা যাচ্ছে, রাত ১২টার পরে বিদ্যুৎ চলে গেল। গরমে বাচ্চারা অস্থির হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে দুই ঘণ্টার জায়গায় দেখা যাচ্ছে কোনোমতে এক ঘণ্টা পড়ে চলে যাচ্ছে। আর এত গরমে সবারই খুব কষ্ট হচ্ছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন