[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

শেষ মুহূর্তের গোলে স্পেনকে রুখে দিল অদম্য ব্রাজিল

প্রকাশঃ
অ+ অ-

টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোল করলেন এনদ্রিক | এক্স

খেলা ডেস্ক: অবিশ্বাস্য!

এটুকুতেও বোধহয় স্পেন-ব্রাজিল ম্যাচের রোমাঞ্চটুকু ধরা যাচ্ছে না। এমন ম্যাচের স্বাদ যে শুধু প্রাণভরে দেখেই উপভোগ করতে হয়। আজ রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে যে নাটকীয়তার দেখা মিলল, তার রেশ রয়ে যাবে আরও অনেক দিন। এমন ম্যাচে কেউ হারলেই বোধহয় নষ্ট হত এর মাহাত্ম্যটুকু। নাহ, শেষ পর্যন্ত ব্রাজিল-স্পেনের কেউই জেতেনি। ৩-৩ গোলে ড্র হওয়া এ ম্যাচে না কেউ না জেতাটাই বরং এ ম্যাচের সৌন্দর্য।

একটি ‍ফুটবল ম্যাচ থেকে যা যা প্রত্যাশা করা হয় সব রসদই যেন ছিল এ ম্যাচে। শুরুতে স্পেনের একচ্ছত্র দাপট, এরপর ব্রাজিলের রূপকথার গল্পের মতো ঘুরে দাঁড়ানো। এরপর লামিনে ইয়ামালের ছড়ি ঘুরানোর জবাবে ফিলিপে এনদ্রিকের দুর্দান্ত গোল। দলীয় কিংবা ব্যক্তিগত নৈপুণ্য; কোনো দিক থেকে নিরাশ করেনি এ ম্যাচটি।

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর শুরুটা অবশ্য ছিল অন্য রকম। প্রথমার্ধের শুরু থেকেই স্পেনের প্রেসিংয়ে টালমাটাল ব্রাজিল। প্রথম দিকের বেশ কিছু সময় বল শুধু ব্রাজিলের অর্ধেই ছিল। একপর্যায়ে ম্পেনের আক্রমণের ঝড় সামলাতে না পেরে বক্সের ভেতর লামিনে ইয়ামালকে ফাউল করে বসেন জোয়াও গোমেজ। স্পট কিকে ভুল করেন রদ্রি।

গোল করে এগিয়ে দেন স্বাগতিকদের। পিছিয়ে পড়েও সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছিল না ব্রাজিল। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোর সমন্বয়ে প্রথম বলার মতো আক্রমণে যায় ব্রাজিল। যদিও সেই আক্রমণ থেকে গোল পায়নি লাতিন দেশটি।

ম্যাচের শুরু থেকেই স্পেনের আধিপত্যের ছড়ি ছিল ইয়ামালের হাতে। এখনো কৈশোর না পেরোনো ইয়ামালের পায়ে যখনই বল গেছে ব্রাজিলের রক্ষণকে নাচিয়ে ছেড়েছে। ইয়ামালের পায়ে গোলক বস্তুটি যেন সৌন্দর্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল। বলের ওপর তাঁর প্রতিটি স্পর্শ ছিল শিল্পীর তুলির আঁচড়ের। এমনকি দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে মাঠ ছাড়ার সময় দাঁড়িয়ে অভিবাদনও জানানো হয় ইয়ামালকে।

ইয়ামালের মুগ্ধতা ছড়ানোর রাতে স্পেনকে দুর্দান্ত এক গোলে ২-০ গোলের লিড এনে দেন দানি অলমো। বলে রাখা ভালো, এই গোলের সহায়তাকারী কিন্তু সেই ইয়ামালই ছিলেন। তার পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর একাধিক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেছেন অলমো। এই গোলের পথে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড যেভাবে লুকাস বেরালদোকে নাটমেগ করেছেন, তা এই সেন্টার ব্যাকের আরও অনেক দিন মনে থাকবে।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না ব্রাজিল। বল পায়েই রাখতেই হিমশিম খাচ্ছিল তারা। ইংল্যান্ডের ম্যাচের ধারও অনেকটা অনুপস্থিত ছিল। তবে হাবুডুবু খেতে থাকা ব্রাজিলকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেয় স্পেনই। আরও বিশেষভাবে বললে গোলরক্ষক উনাই সিমন। বক্সের সামনে রদ্রিগোর পায়ে বলটা যে তিনিই তুলে দিয়েছিলেন্ সিমনই। এমন সুযোগ হাতছাড়া করেননি রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ব্যবধান ২-১ করে ব্রাজিল। এই ব্যবধানেই বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির পর রাফিনিয়াকে তুলে বিস্ময়-বালক এনদ্রিককে মাঠে নামান দরিভার। কিছু দিন যে মাঠটি তাঁর আপন ঠিকানা হতে যাচ্ছে, সেই বার্নাব্যুকে মাতিয়ে তুলতে এনদ্রিকের সময় লাগল মাত্র ৪ মিনিট। বক্সের ভেতর দৃষ্টিনন্দন এক ভলিতে গোল করে ব্রাজিলকে ২-২ সমতায় ফেরান ১৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার।

ব্রাজিল সমতায় ফেরার পর ম্যাচ অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। স্পেন কিছুটা আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও, ব্রাজিলও চেষ্টা করছিল লিড নেওয়ার। তবে ব্রাজিল সমর্থকদের হতাশা বাড়ে ৮৫ মিনিটে স্পেন দ্বিতীয় পেনাল্টি পেলে। ইয়ামালের থ্রু বল ঠেকাতে গিয়ে কারভাহালকে ফাউল করে স্পেনকে এ পেনাল্টি উপহার দেন বেরালদো। এবারও ভুল করেননি স্পেন অধিনায়ক। গোল করে স্পেনকে লিড এনে দেন ৩-২ গোলে। এরপর ম্যাচ যখন শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায় তখনই দেখা মেলে আরেক চমকের। এবার গালেনোকে ফাউল করে ব্রাজিলকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেন কারভাহাল। স্পট কিকে পাকেতা গোল করলে উল্লাসে মাতে ব্রাজিল।

এ ড্রয়ে নতুন এক বার্তাও দিলেন ব্রাজিলের নতুন কোচ দরিভাল। এই ব্রাজিল হারার আগে হারে না। কোপা আমেরিকার আগে ইংল্যান্ড ও স্পেনের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবে ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাসে নতুন করে হাওয়া দেবে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন