[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

কাঁদলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, রাজশাহী-৫ আসনে ভোট পুনর্গণনার দাবি

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ভোটের পর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা-নির্যাতন নেমে এসেছে জানিয়ে ওবায়দুর একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ওবায়দুর রহমান ভোটে অনিয়ম ও নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি ৩ হাজার ৫১ ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ওবায়দুর ভোটারের আঙুলের ছাপ ও স্বাক্ষর মিলিয়ে ভোট পুনর্গণনা দাবি জানিয়েছেন। ভোটের পর একের পর এক কর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাটের কথা জানাতে গিয়ে এ সময় কেঁদে ফেলেন তিনি।

ওবায়দুর রহমান জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে সাবেক দুবারের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ নৌকা প্রতীকে ৮৬ হাজার ৯১৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান ঈগল প্রতীকে ৮৩ হাজার ৮৬২ ভোট পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওবায়দুর। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় রাজশাহী জেলা পরিষদের সদস্য আসাদুজ্জামান, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সেলিম শেখ, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তালেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ওবায়দুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে ও নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকে তাঁর নেতা-কর্মীসহ তাঁকে নৌকার প্রার্থী ও তাঁর পক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করেন। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে এলে তাঁর কর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে পেটোয়া বাহিনী দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। ভোটের দিন ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার পথ রুদ্ধ করা হয়। তাঁরা আগে থেকেই ভোটারদের বলে বেড়ান, ‘ভোট যেই পাক, আবদুল ওয়াদুদ ভাই এমপি হবে’।

ওবায়দুর অভিযোগ করেন, ভোটের দিন দুপুরের মধ্যেই বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে ঈগল প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের নৌকার এজেন্ট ও সমর্থকেরা জোর করে বের করে দেন। এত কিছুর পরও মানুষ ব্যাপক হারে ঈগল প্রতীকে ভোট দেন। তিনি বেশি ভোট পেলেও আবদুল ওয়াদুদকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়, যা ভোটারদের কাম্য ছিল না।

ভোটের পর থেকেই তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা-নির্যাতন নেমে এসেছে জানিয়ে ওবায়দুর এ পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি হামলা ও লুটপাটের শিকার তাঁর কর্মীদের তালিকা তুলে ধরেন। প্রশাসনের সাহায্য চেয়েও পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ওবায়দুর বলেন, ‘আমার কর্মীদের পানের বরজ থেকে পান কেটে নিয়েছে। পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলেছে। কেউ পেঁয়াজ বিক্রি করতে এসে টাকা নিয়ে ফেরত যেতে পারেনি। কোথাও চায়নিজ কুড়াল, হাসুয়া দিয়ে নেতা-কর্মীদের কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তাঁরা আজকে হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় জীবন পার করছেন। দুই উপজেলার প্রতিটি গ্রামে আমার কর্মী-সমর্থকেরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রশাসনকে বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

ওবায়দুর শেষে বলে, ‘স্বতন্ত্র নির্বাচন করার পেছনে আমাদের দলের অনুমতি ছিল। সেই কারণে আমরা নির্বাচন করেছি। পুঠিয়া-দুর্গাপুরে ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে। আমি পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানাচ্ছি।’

এদিকে, আজ দুপুরে ওবায়দুরের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. এনামুল হক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশনা থাকলেও নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে আনুমানিক দিবাগত রাত দুইটার দিকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার দেওয়া হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নৌকার এজেন্টরা ঈগল প্রতীকের এজেন্টদের জাল স্বাক্ষর নিয়েছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছ। ভোট শেষ হওয়ার আগেই প্রার্থী নিজেকে সংসদ সদস্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এই অবস্থায় ভোটারদের আঙুলের ছাপ ও স্বাক্ষর মিলিয়ে ভোট পুনর্গণনা দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ভোটে জয়ী হয়ে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদকে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন