[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহীতে চার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে দুই বছর পার, দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশঃ
অ+ অ-

রাজশাহী নগরীর তালাইমারী থেকে কাটাখালী বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের নির্মাণকাজ চলছে ধীর গতিতে। শুক্রবার বিনোদপুর এলাকা থেকে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: মাত্র চার কিলোমিটার সড়ক। তা নির্মাণ করতেই দুই বছর পার করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারপরও কাজ শেষ হয়নি। এখনো কোনো স্থান কার্পেটিংয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে, কোথাও নতুন করে ফেলা হচ্ছে বালু-পাথর। রাজশাহী নগরীর তালাইমারী থেকে কাটাখালী বাজার পর্যন্ত এই রাস্তাটি দুই বছর ধরে এভাবে পড়ে থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। 

এই সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ১০ কিলোমিটার। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের এই অংশটি রাজশাহী শহরে প্রবেশের প্রধান পথ। এর উত্তরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) রয়েছে। এটি ছয় লেনে উন্নীত করতে দরপত্র আহ্বান করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। ৯৪ কোটি টাকার এ কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার লিমিটেড। 

সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের অক্টোবরে। দুই বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি। এর মধ্যেই গত ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাই আগামী ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ করা নিয়ে রয়েছে সংশয়। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি দেয়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ কারণে জটিলতা দেখা দেয়। ফলে সময়মতো কাজ শেষ করা যায়নি। তবে এলাকার লোকজন বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজও করছে কচ্ছপ গতিতে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরোনো দুই লেন মহাসড়কের কার্পেটিং ইতিমধ্যে তুলে ফেলা হয়েছে। কিছু স্থান ছয় লেনে করা হচ্ছে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটি করা হচ্ছে চারলেন। সড়কের মাঝে বিভাজক করা হয়েছে। কিন্তু দুপাশে কার্পেটিং করা হয়নি। ফলে কার্পেটিং ছাড়া খানাখন্দে ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে যানবাহনকে। কাজের কারণে কোথাও দুইদিকের যানবাহনকে আবার সংকীর্ণ এক লেন দিয়ে চলতে হচ্ছে। এতে পথচারী ও গাড়ির চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এদিকে সড়কের দুপাশে ড্রেন নির্মাণ করা হলেও বসানো হয়নি স্ল্যাব। ফলে চলতে গিয়ে ড্রেনের ভেতর পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ড্রেনের পানিতে পড়ে যান। 

বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একটু রোদ হলে এখানে ধুলোবালিতে টেকা মুশকিল হয়ে পড়ে। ঠিকাদারের লোকজন ঠিকমতো পানিও দেয় না। আর একটু বৃষ্টি হলে রাস্তা কাদাপানিতে ভরে যায়। তখন চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।’

রিকশাচালক মো. হাবিব বলেন, ‘রাস্তাটার যেকোনো একপাশ অন্তত পুরোপুরি শেষ করলে ভালো হতো। তাহলে চলাচল করে শান্তি পাওয়া যেত। তা না করে একসঙ্গে দুইদিকের কাজ শুরু করা হয়েছে। কোনদিকেরই কাজ শেষ হচ্ছে না। দুই বছর ধরে আমাদের ভোগান্তির শেষ হচ্ছে না। যেভাবে কাজ চলছে তাতে শেষ হতে আরও দুই বছর লাগাবে ঠিকাদার।’

সাইটেই পাওয়া যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ সার্ভেয়ার আবদুল লতিফকে। তিনি বলেন, ‘কাজ শুরুর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জমি নিয়ে একটা জটিলতা হয়। সে জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে কাজে বিলম্ব হয়। জমি না দেওয়ায় শেষে সিদ্ধান্ত হলো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটি চারলেনেই শেষ করা হবে। এখন দ্রুত কাজ শেষ হবে।’ 

জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতানুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘আমাদের ওপর নির্দেশ দেওয়া আছে যে এক ছটাক জায়গাও কাউকে হস্তান্তর করতে পারব না। তাই জমি দিতে পারিনি। আমরা নিয়মের মধ্যেই আছি। নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করতে চাই।’ 

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, ‘কাজের মেয়াদ একদফা বাড়িয়ে ২৮ ডিসেম্বর করা হয়েছে। এবার এর মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন