[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

স্যামসন এইচ চৌধুরীর সমাধির পাশে সমাহিত অনিতা চৌধুরী

প্রকাশঃ
অ+ অ-

অনিতা চৌধুরীর সামাধিতে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁর সন্তান, স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা। সোমবার দুপুরে পাবনা জেলা সদরের বৈকুণ্ঠপুরে এস্ট্রাস খামারবাড়িতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর সমাধির পাশে তাঁর সহধর্মিণী অনিতা চৌধুরীর মরদেহ সমাহিত করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পাবনা জেলা সদরের বৈকুণ্ঠপুরে এস্ট্রাস খামারবাড়িতে তাঁকে সমাহিত করা হয়। এর আগে বিশেষ প্রার্থনা, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও চোখের জলে তাঁকে শেষবিদায় জানান স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা।

ঢাকা থেকে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অনিতা চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছায় পাবনা সদরের আতাইকুলা গ্রামে। সেখানকার ব্যাপ্টিস্ট চার্চে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ প্রার্থনা। প্রার্থনা পরিচালনা করেন আতাইকুলা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের ফাদার রুবেন সলিল বিশ্বাস। প্রার্থনা শেষে মায়ের স্মৃতিচারণা করেন মেজ ছেলে তপন চৌধুরী। পরে মরদেহ নেওয়া হয় এস্ট্রাস খামারবাড়িতে। সেখানে দ্বিতীয় প্রার্থনা ও শেষশ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা। প্রার্থনা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট ফেলোশিপের সাধারণ সম্পাদক লিয়র পি সরকার।

আনুষ্ঠানিকতা শেষে পারিবারিক সমাধিস্থলে প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরীর সমাধির পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়। এ সময় পাবনা-৪ আসনের সংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি, তাঁর বড় ছেলে স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী, মেয়ে স্কয়ার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র, মেজ ছেলে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, ছোট ছেলে স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বিসিআইএর সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান, পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন, পুলিশ সুপার আকবর আলীসহ স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা উপস্থিত থেকে শেষশ্রদ্ধা জানান।

প্রার্থনা অনুষ্ঠানে লিয়র পি সরকার বলেন, স্যামসন এইচ চৌধুরীর ব্যবসায়িক সফলতার পেছনের কারিগর ছিলেন অনিতা চৌধুরী। তিনি স্কয়ারের প্রত্যেক কর্মীকে সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। স্কয়ার পরিবারের মাতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি, ভাবতেন অসহায় শিশুদের কথা। তাদের জন্য খাবার পাঠাতেন। সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। অনিতা চৌধুরীর মৃত্যু শুধু পাবনা নয়; বাংলাদেশের জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

স্কয়ার গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনিতা চৌধুরী ১৯৩২ সালের ৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৭ সালের ৬ আগস্ট স্যামসন এইচ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সন্তানদের লালন-পালনসহ স্বামীর সুখে-দুঃখে পাশে থেকে পরামর্শ দিতেন অনিতা চৌধুরী। স্কয়ার পরিবারের প্রত্যেক কর্মীর কথা তিনি ভাবতেন। স্কয়ারে তাঁদের এক বেলা বিনা মূল্যে খাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন। পাবনায় ২০১২ সালের ৫ মে স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরী ‘মাতৃছায়া’ নামে এক হাজার আসনের একটি খাবার ঘর উদ্বোধন করেন।

১৯৬৮ সাল থেকে স্কয়ার গ্রুপে কাজ করেন দবির উদ্দিন আহম্মেদ। বর্তমানে তিনি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের আবাসিক উপদেষ্টা। তিনি বলেন, স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরী কর্মীদের সন্তানদের মতো ভালোবাসতেন। তাঁর ইচ্ছাতেই কারখানায় খাবার তৈরি শুরু হয়েছিল। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শ্রমিক—সবাই একই খাবার খান। স্কয়ারের কর্মীদের কাছে তিনি মায়ের মতো ছিলেন। তাঁকে হারিয়ে স্কয়ার পরিবার মাতৃছায়া হারাল।

অনিতা চৌধুরী বার্ধক্যের সমস্যার কারণে গত রোববার বেলা ১টা ৬ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন