[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিদায়, রানি এলিজাবেথ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানির শেষকৃত্য সম্পন্নের পর ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর সেনারা রানির কফিন বহন করে উইন্ডসর ক্যাসলে নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় রাজা তৃতীয় চার্লসসহ রাজপরিবারের সদস্যরাও সঙ্গে ছিলেন। গতকাল যুক্তরাজ্যের লন্ডনে | ছবি: এএফপি

বিবিসি লন্ডন: দুই মিনিটের নিশ্চল নীরবতা। বাদ্যবাজনা থেমে গেছে। সেনাদের বুটের শব্দ শোনা যাচ্ছে না আর। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার শেষে সবকিছুই যেন স্তব্ধ হয়ে গেছে। জাতীয় সংগীত বেজে ওঠার আগে রানিকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে দুই মিনিট নীরবতায় কাটে। এরপরই তাঁর কফিন উইন্ডসর ক্যাসলের দিকে নেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কয়েক দিন ধরে হাজার হাজার মানুষ রানিকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে যে দীর্ঘ অপেক্ষা করেছেন, তার সমাপ্তি এখানেই। 

রানির সাত দশকের রাজত্বের অবসান দেখল বিশ্ব। গত বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে মারা যান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটিশ রাজত্বের দায়িত্ব নিয়েছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

তিনি ৭০ বছর রাজকার্য পরিচালনা করে অনন্য ইতিহাস গড়েন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে ৭৩ বছর বয়সী তৃতীয় চার্লস স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন রাজা হয়েছেন। রানির মৃত্যুর পর ১০ দিন ধরেই তাঁর শেষকৃত্য আর নতুন রাজার দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়টি সারা বিশ্বে আলোচিত ছিল। গতকাল সোমবার রানির শেষকৃত্যের মধ্য দিয়ে একটি দীর্ঘ সময়ের অবসান হলো।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাজত্ব শুরুর প্রথম দিকে কেউ কেউ একে নতুন এলিজাবেথান যুগ ঘোষণা করেছিলেন। নতুন রানিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল নতুন উৎসাহ–উদ্দীপনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হতাশাময় ধূসর দিনগুলোকে পার করে প্রযুক্তি ও সমৃদ্ধির নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল মানুষ। প্রথম কয়েক দশকে রানি তাঁর বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সবকিছু সামলেছেন। গত কয়েক দশকে ব্যাপক পরিবর্তনশীল বিশ্বে তিনি ছিলেন অবিচল ও স্থিরমতি। গত কয়েক দিনে রানির গত কয়েক দশকের অর্জনকেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন মানুষ।

রানির শেষকৃত্য ঘিরে উৎসাহ–উদ্দীপনার কমতি ছিল না মানুষের মধ্যে। মধ্য লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার হলমুখী মানুষের ভিড় সে কথাই বলে। গত রোববার পর্যন্ত মানুষ রানিকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করেছেন। মানুষের সারি কয়েক কিলোমিটার দূরের টেমস নদী পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষকে মানুষকে আর অপেক্ষা না করার অনুরোধ করতে হয়। রানির শেষকৃত্য ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, রাজা, বাদশাহ মিলিয়ে দুই হাজারের বেশি অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান যুক্তরাজ্যে এসে রানিকে শ্রদ্ধা জানান। বিশেষ অতিথিদের মিলনমেলায় পরিণত হয় লন্ডন।

কয়েক দিন ধরে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর গতকাল সকাল থেকেই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়) ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ওয়েস্টমিনস্টার হলে রানির প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় শেষ হয়। সন্ধ্যা সাতটায় পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলের অভ্যন্তরে অবস্থিত রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেল সমাধিতে রানিকে সমাহিত করা হয়। রানির সমাধির ওপর মার্বেলের ফলকে খোদাই করে লেখা হয়েছে, ‘দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২’।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন