[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

পুতিন ও সির বৈঠক: পশ্চিমাদের রুখতে ঐক্যবদ্ধ চীন–রাশিয়া

প্রকাশঃ
অ+ অ-

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং (বাঁ থেকে), রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মঙ্গোলিয়ার প্রেসিডেন্ট উখানা খুরেলসুখ উজবেকিস্তানের সমরখন্দে বৈঠক করেছেন | ছবি : রয়টার্স

পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক:  ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। বৃহস্পতিবার উজবেকিস্তানের সমরখন্দে বিশ্বের ক্ষমতাধর দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠক হয়। পশ্চিমাদের রুখতে কৌশলগত মিত্রতার ওপর জোর দেন তাঁরা।

সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলন শুরুর আগে সি ও পুতিন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন। গোলটেবিল বৈঠকে দুই দেশের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

২০২০ সালের প্রথম দিকে সারা বিশ্বে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর চীনের প্রেসিডেন্ট সি কোনো বিদেশ সফরে যাননি। দুই বছরের বেশি সময় পর প্রথম বিদেশ সফরে গিয়ে তিনি পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করলেন। এ বৈঠক এমন এক সময় হলো, যখন ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া আর তাইওয়ান প্রণালিতে উত্তেজনা নিয়ে চীন পশ্চিমা দেশগুলোর চাপে রয়েছে।

বৈঠকে পুতিনকে সি বলেছেন, পরাশক্তির ভূমিকা গ্রহণের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক চীন। সামাজিক বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে নাড়িয়ে দেওয়া বিশ্বে স্থিতিশীলতা অর্জন ও ইতিবাচক শক্তি প্রয়োগে পথপ্রদর্শকের ভূমিকাও পালন করতে চায় বেইজিং।

ঐক্য প্রদর্শনের নজির হিসেবে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেইজিংয়ে মুখোমুখি বৈঠক করেছেন ফাইল ছবি

অপর দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, চীনের ‘এক চীন’ নীতিকে সমর্থন করে রাশিয়া। তিনি আরও বলেছেন, তাইওয়ান প্রণালিতে যুক্তরাষ্ট্রের উসকানির বিরোধিতা করে তাঁর দেশ। বৈঠকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের একহাত নেন পুতিন। ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর একাধিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে ক্ষুব্ধ পুতিন। তিনি বলেন, একমুখী বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য সম্প্রতি যে চেষ্টা শুরু হয়েছে, তা পুরোপুরি কুৎসিত এবং অগ্রহণযোগ্য।

ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের ‘ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান’কে রাশিয়া গুরুত্বসহকারে দেখছে বলে সিকে মনে করিয়ে দেন পুতিন। তাইওয়ান ইস্যুতে চীনকে সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেন সংকট নিয়ে আমাদের চীনা বন্ধুদের ভারসাম্য অবস্থানকে আমরা উচ্চ প্রশংসা করি।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন পুতিন। এর কয়েক দিন আগে বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে সির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তাঁরা তখন দুই দেশের সম্পর্ককে ‘সীমাহীন’ বলে অভিহিত করেন। ইউক্রেনে হামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দেয়। কিন্তু এ সময় পশ্চিমা দেশগুলোর পথে না হেঁটে ভারসাম্যমূলক নীতি বজায় রেখেছে চীন।

চীন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিয়ে এসসিও গঠিত হয় ২০০১ সালে। পশ্চিমা দেশগুলোর বিপক্ষে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা জোট গড়তে এটা প্রতিষ্ঠা করা হয়।

সির সঙ্গে বৈঠকের আগে পুতিন কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তান, ইরান ও পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি পশ্চিমা বিশ্বের তীব্র সমালোচনা করেন।

ওই সম্মেলনের উদ্বোধনের সময় পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের উদ্বেগের বিষয়টি আমরা বুঝি। আজকের বৈঠকে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পারব।’

শান্তির পথ অনেক দূরে
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গত বুধবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ফোনালাপ শেষে সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনে শান্তির সম্ভাবনা খুবই কম।

শান্তি আলোচনা নিয়ে তেমন কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা না থাকলেও রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির বাধা উত্তরণে পুতিনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে জানান গুতেরেস। তবে তিনি সতর্ক করেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানার বিষয়ে রাতারাতি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে, এমনটা বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, শান্তির পথ এখনো অনেক দূরে। শিগগিরই এটা হবে বললে সেটা মিথ্যা বলা হবে।’
Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন