[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

তারেক রহমানকে সমর্থন দিয়ে এনসিপি নেতার পদত্যাগ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
মীর আরশাদুল হক | ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ছেড়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হক। তিনি অভিযোগ করেছেন, দল জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।

মীর আরশাদুল হক এনসিপিতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিবের পাশাপাশি নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য, মিডিয়া সেল ও শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য, পরিবেশ সেলের প্রধান এবং চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম–১৬ আসনে দলটির মনোনয়নও পেয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সাবেক সহসভাপতি।

ছাত্রজীবনে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলন-প্রতিবাদেও যুক্ত ছিলেন মীর আরশাদুল হক। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর তিনি প্রথমে জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যুক্ত হন। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা এনসিপি গঠন করলে তাতেও যোগ দেন তিনি।

১৭ বছর পর লন্ডন থেকে তারেক রহমানের ফেরার দিন বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুকে ‘একটি বিশেষ ঘোষণা’ শিরোনামে তিনি এনসিপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। লিখেছেন, ‘আমি এই মুহূর্তে এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলাম। চট্টগ্রাম-১৬ সংসদীয় আসনে এনসিপির হয়ে আমি নির্বাচন করছি না। আজকে একটি বিশেষ দিনে এই ঘোষণাটি দিচ্ছি, যেদিন ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। সুস্বাগতম।’

এনসিপি নিয়ে হতাশার কথা জানিয়ে মীর আরশাদুল লিখেছেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এনসিপির যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, দল ও নেতারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখে যোগ দিয়েছিলাম, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দল ও বড় অংশের নেতারা ভুল পথে রয়েছেন। এই ভুল পথে আমি চলতে পারি না। এই মুহূর্ত থেকে আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকবে। তাদের প্রতি শুভকামনা রইল।’

গণতন্ত্রে উত্তরণ ও দেশে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা এখন সবচেয়ে জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার কাছে মনে হচ্ছে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ও জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করার বিকল্প নেই। জুলাই অভ্যুত্থান ও তারেক রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও বক্তব্য পর্যালোচনা করে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ, এই মুহূর্তে সবাইকে ধারণ করে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা তিনিই রাখেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘অন্যান্য দল যখন ধর্ম ও পপুলিজমকে প্রধান এজেন্ডা করে নির্বাচনী মাঠে যাচ্ছে, তারেক রহমান মানুষের দৈনন্দিন জীবন—স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ—সহ বিভিন্ন খাতে সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবমুখী সমাধান উপস্থাপন করছেন। এই স্মার্ট অ্যাপ্রোচ আমাকে আকৃষ্ট করেছে।’

মীর আরশাদুল হক বলেন, ‘তরুণদের উচিত পপুলিজম বা হঠাৎ হুজুগে প্রভাবিত না হয়ে দেশের সামগ্রিক স্বার্থ, ভবিষ্যত ও কল্যাণের কথা বিবেচনা করে তারেক রহমানের জনকল্যাণমূলক ভিশনে সহযোগিতা ও সমর্থন দেওয়া। আমি ব্যক্তিগতভাবে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।’

এনসিপির কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র জানায়, দল নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সমঝোতার আলোচনায় রয়েছে। দলের একটি অংশের সমর্থন থাকলেও অন্যরা মানছে না। মীর আরশাদুল হক হলেন সেই অংশের একজন।

যোগাযোগ করলে মীর আরশাদুল বলেন, ‘এনসিপি ভুল পথে চলে গেছে। তারা তরুণদের নতুন দল হিসেবে গড়ে তোলায় ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমি পদত্যাগ করেছি এবং দেশের স্বার্থে বিএনপি ও তারেক রহমানকে সমর্থন করছি।’

তিনি জানিয়েছেন, পদত্যাগপত্র ইতিমধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নাহিদ ও আখতার সাড়া দেননি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন