[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

প্রবেশমুখে টোল, অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে

টার্মিনাল এলাকায় টোল আদায়ের জন্য প্রশাসন থেকে ২৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় ইজারা নেন আবদুল মতিন নামের জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা।
প্রকাশঃ
অ+ অ-
লক্ষ্মীপুরে ট্রাক থামিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

টার্মিনালের জন্য ইজারা নেওয়া হয়েছিল। তবে টোল আদায় করা হচ্ছে সড়ক থেকে। ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ড ভ্যান প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। রসিদও দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের পৌর এলাকায় নিয়মিত এই দৃশ্য দেখা যায়।

খোঁজে জানা গেছে, জেলার পৌর এলাকার উত্তর তেহমুনী, দক্ষিণ তেহমুনী, ঝুমুর এলাকা, মজু চৌধুরী হাট সড়ক ও সাবেক গোডাউন রোডে নিয়মিত টোল নেওয়া হচ্ছে। অথচ এসব সড়কে টোল নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। মূলত টোল নেওয়ার কথা ছিল লক্ষ্মীপুর-রায়পুর সড়কের পাশে বাঞ্ছানগর এলাকায় থাকা টার্মিনাল থেকে।

পৌর প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, টার্মিনাল এলাকায় টোল নেওয়ার জন্য প্রশাসন থেকে ২৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন আবদুল মতিন নামের জামায়াতে ইসলামীর নেতা। তিনি জামায়াতে ইসলামীর জেলা শহরের যুব বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক। চলতি বছরের ১৭ মার্চ তিনি দরপত্র পান। পরে ১৩ এপ্রিল পৌরসভা প্রশাসকের সঙ্গে তাঁর চুক্তি হয়। এই চুক্তিতে কোথা থেকে টোল নেওয়া যাবে, কত টাকা নেওয়া হবে, তা উল্লেখ করা ছিল। এছাড়া সরকার নির্দেশ দিয়েছে যে নির্ধারিত টোলের বেশি নেওয়া যাবে না। তবে এই নিয়ম এখন মানা হচ্ছে না।

 
টার্মিনাল ছাড়া সড়কেও প্রকাশ্যে টোল আদায় করা হচ্ছে। আবার ফি নেওয়া হচ্ছে নির্ধারিত হারের চেয়ে কয়েক গুণ। এ কারণে পরিবহনমালিকদের খরচ বেড়েছে। চালক-শ্রমিকেরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ট্রাকচালক আবুল কাশেম
অবৈধ টোল আদায়ে ক্ষুব্ধ জেলার যানবাহনের মালিক ও শ্রমিকরা। ইতিমধ্যে তারা এ টোল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। জানতে চাইলে এসব কর্মসূচিতে থাকা ট্রাকচালক ফারুক হোসেন ও আবুল কাশেম বলেন, টার্মিনাল ছাড়া সড়কেও প্রকাশ্যে টোল নেওয়া হচ্ছে। আবার ফি নেওয়া হচ্ছে নির্ধারিত হারের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে পরিবহন মালিকদের খরচ বেড়েছে, চালক-শ্রমিকরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

ঢাকা থেকে রামগতি যাওয়ার পথে ট্রাকচালক মাসুদ মিয়া বলেন, পথে চারটি পৌরসভা পার হলেও কোথাও টোল দিতে হয়নি। লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকায় ঝুমুরে তাকে ১০০ টাকা দিতে হয়েছে। ট্রাকচালক আবদুল কাদের বলেন, ‘সড়কে দাঁড় করিয়ে জোর করে টোল নেন। দিনে একাধিকবার টাকা দিতে হয়।’ আরেক চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘টার্মিনাল ছাড়া টোল নেওয়া নিষেধ, সেটা সবাই জানে। তবু লক্ষ্মীপুরে ঢুকলেই টাকা চাওয়া হয়। আমরা এটির অবসান চাই।’

সড়ক থেকে অবৈধ টোল নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইজারাদার ও জামায়াত নেতা আবদুল মতিন। তবে তিনি দাবি করেন, ইজারা তার নামে থাকলেও তিনি এখন আর টোল আদায়ে যুক্ত নন। তাঁর কয়েকজন অংশীদার এখন এটি করছেন। দল থেকে নিষেধ করা হয়েছে, তাই তিনি আর টোল নেন না।

আবদুল মতিন বলেন, স্থানীয় বিএনপির নেতা লোকমান হোসেনসহ কয়েকজনের সঙ্গে সমঝোতা করে তিনি ইজারা নিয়েছিলেন। এ কারণে তাকে আরও বাড়তি টাকা দিতে হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ৫০ টাকা টোল নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা। তাই কাগজে নাম থাকলেও তিনি সরে এসেছেন।

তবে লক্ষ্মীপুর পৌর বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক লোকমান হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ইজারার জন্য ১৮ জন দরপত্র নিয়েছিলেন। তবে আবদুল মতিনই ইজারা পেয়েছেন। এখন তার লোকজন সড়ক থেকে টোল নিচ্ছেন, বিএনপির কোনো অংশ নেই।

পৌর প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন জানান, টার্মিনালের বাইরে বা অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ তিনি শুনেছেন। তবে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানের বাইরে বা বেশি টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

জেলার সদর সার্কেলর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল হক বলেন, টোল আদায়কারীদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধভাবে টোল নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও কেউ করলে মামলা করা হবে।
Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন