[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় সায়মা ওয়াজেদকে ফেরানোর উদ্যোগ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল | গ্রাফিক্স: পদ্মা ট্রিবিউন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটি থেকে ফিরিয়ে এনে পুনর্বহালের উদ্যোগ জোরালো হচ্ছে। এ উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে অঞ্চলের প্রভাবশালী সদস্য দেশ ভারত। ভারতের রাজধানী দিল্লিতেই ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সদর দপ্তর অবস্থিত।

চলতি বছরের ১১ জুলাই সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠায় ডব্লিউএইচও। এর চার মাস আগে দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।

সায়মা ওয়াজেদকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তে ভারতসহ একাধিক সদস্য দেশ অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং তাকে পুনর্বহালের পক্ষে অবস্থান নেয়।

আগামী সপ্তাহে ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন বিষয়ক দ্বিতীয় গ্লোবাল সামিটে অংশ নিতে দিল্লি সফরে আসছেন। এ সফরে তিনি সংস্থাটির নতুন কার্যালয় ভবনের উদ্বোধনও করবেন। জানা গেছে, এই সফরের সময়ই সায়মা ওয়াজেদকে পুনর্বহালের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চায় একাধিক সদস্য দেশ।

ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে মোট ১০টি সদস্য দেশ রয়েছে—বাংলাদেশ, ভুটান, উত্তর কোরিয়া, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও তিমর–লেস্তে বা পূর্ব তিমুর। এর মধ্যে ভারতসহ অন্তত ছয়টি দেশ সায়মা ওয়াজেদকে দ্রুত নিজ পদে ফিরিয়ে আনার পক্ষে সক্রিয় সমর্থন দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে। গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। সায়মা ওয়াজেদ আগে থেকেই ডব্লিউএইচওর দায়িত্বে দিল্লিতে অবস্থান করায় বর্তমানে মা ও মেয়ে একই দেশে রয়েছেন।

সায়মা ওয়াজেদকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানোর পর তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে ক্যাথরিনা বোয়েহমি দায়িত্ব নেন। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক একটি অভ্যন্তরীণ ই–মেইলের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা সংস্থার কর্মীদের জানান।

প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের মেয়াদে আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৯ সালের শুরুতে। ভারতসহ সমর্থনকারী দেশগুলো চাইছে, তিনি যেন পুরো মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

জানা গেছে, গত তিন থেকে চার মাসে ভারতসহ কয়েকটি সদস্য দেশ মৌখিক ও লিখিতভাবে ডব্লিউএইচও কর্তৃপক্ষের কাছে সায়মা ওয়াজেদকে দায়িত্বে ফেরানোর দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, একটি সদস্য দেশের দাবির ভিত্তিতে একজন নির্বাচিত পূর্ণকালীন আঞ্চলিক পরিচালককে ছুটিতে পাঠানো সংস্থার নিয়মনীতি ও কার্যক্রমের জন্য ক্ষতিকর।

এ ছাড়া সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই না করেই কীভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে এসব দেশ।

উল্লেখ্য, ছুটিতে পাঠানো হলেও সায়মা ওয়াজেদের বেতন ও অন্যান্য সব সুযোগ–সুবিধা বহাল রয়েছে। তিনি পূর্ণ বেতন, বাড়িভাড়া এবং চাকরির শর্ত অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছেন। দায়িত্ব পালন না করেও আঞ্চলিক পরিচালকের সব খরচ বহন করতে হচ্ছে—এ সিদ্ধান্ত জাতিসংঘের একটি সংস্থার জন্য কতটা যুক্তিসংগত, তা নিয়েও কয়েকটি দেশ প্রশ্ন তুলেছে।

জুলাইয়ে তাকে ছুটিতে পাঠানোর পর ডব্লিউএইচওর ওয়েবসাইট থেকে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের পেজটি সাময়িকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে সদস্য দেশগুলোর চাপের মুখে সেটি আবার যুক্ত করা হয়। বর্তমানে ওই পেজে সায়মা ওয়াজেদের নাম ও ছবি রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতসহ সমর্থক দেশগুলো চায়, ডিসেম্বরে মহাপরিচালকের দিল্লি সফরেই সায়মা ওয়াজেদকে ছুটি থেকে ফিরিয়ে এনে পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, সায়মা ওয়াজেদের অপসারণ চেয়ে দুদক একটি চিঠি পাঠিয়েছিল, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন হয়ে ডব্লিউএইচওতে পাঠানো হয়। তবে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন