আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো রাজশাহী বিভাগীয় ইজতেমা
![]() |
| হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো রাজশাহী বিভাগীয় ইজতেমা । আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের জীবনের গুনাহ মাফ করে দিন। হে আল্লাহ, আমাদের কবরের যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করুন। আমাদের জানা–অজানা সব গুনাহ মাফ করে দিন। হে আল্লাহ, এই দেশকে রক্ষা করুন, দেশের মানুষকে রক্ষা করুন। আমাদের ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত সব গুনাহ মাফ করে দিন, আমাদের রক্ষা করুন’—মুসল্লিদের কারও চোখ বন্ধ, কারও দৃষ্টি দূরে, কারও চোখ সজল। দুই ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে শুধু বের হচ্ছিল ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনি। হাজারো মুসল্লির একসাথে উচ্চারণে মুখর হয়ে ওঠে রাজশাহী কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠ ও আশপাশের এলাকা।
নগরীর পদ্মাপাড়ের পাঠানপাড়া এলাকায় আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। হাজারো মুসল্লির উপস্থিতিতে শেষ হয় তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের রাজশাহী বিভাগীয় ইজতেমা। মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের হরিয়ানা প্রদেশ থেকে আসা মাওলানা ওমর মেয়াতী।
মোনাজাতে অংশ নেন বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও জয়পুরহাট জেলাসহ দূরদূরান্তের মুসল্লিরা। তারা দুহাত তুলে মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান, দেশ, জাতি ও মানবতার মঙ্গল কামনা করেন।
এর আগে শুক্রবার মুসল্লিরা শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে তাবুর তলায় ইবাদত ও বন্দিগির মধ্যে সময় কাটান। আজ ফজরের নামাজের পর হেদায়েতি বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয় তৃতীয় দিন বা শেষ দিনের ইজতেমা। এরপর নসিহতমূলক কথা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে বিভাগীয় ইজতেমা ময়দানে মানুষের ঢল। যতদূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ। কেউ বসে আছেন, কেউ দাঁড়িয়ে কান পেতে মাইকের দিকে। সবার অপেক্ষা আখেরি মোনাজাতের জন্য। এর মধ্যেই শুরু হয় কাঙ্ক্ষিত মোনাজাত। মোনাজাত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে পড়ে ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা। মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
কথা হয় পাবনা থেকে মোনাজাতে অংশ নিতে আসা আলম হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইজতেমা মাঠের ভেতর আমাদের এলাকার তাবলিগের জামাত এসেছে। আমরা মোনাজাতে অংশ নিতে গতকাল সন্ধ্যায় এসেছি। আমাদের এলাকার তাবলিগের লোকজনের সঙ্গে রাতটি কাটিয়েছি। এরপর আজ সকালে মোনাজাতে অংশ নিয়েছি।’
ইজতেমায় অংশ নেওয়া মহাসিন সরকার বলেন, 'মোনাজাতের সময় মনে হয় আল্লাহ আমাদের কাছে। সব কষ্ট, দুঃখ ভুলে যাই। শুধু চাই আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।'

Comments
Comments