[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

‘অপমানবোধ’ করছেন, নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতির পদ ছাড়তে চান সাহাবুদ্দিন

প্রকাশঃ
অ+ অ-
মো. সাহাবুদ্দিনকে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ করান তৎকালীন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। দরবার হল বঙ্গভবন, ঢাকা, ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল | ফাইল ছবি

আগামী ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর নিজের পদ থেকে সরে যেতে চান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে তিনি অপমানবোধ করছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তবে এর বাইরে পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক। দেশের কার্যনির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে চলে গেলে সাহাবুদ্দিনের অবস্থান গুরুত্ব পায়। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর সাহাবুদ্দিনই দেশের শেষ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ ছিলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল ৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে পাঁচ বছরের জন্য শপথ নেন।

রয়টার্স জানায়, বঙ্গভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে তাদের সাক্ষাৎকার দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, আমি বিদায় নিতে আগ্রহী। আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব রয়েছে বলেই আমি এখানে আছি।' 

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, প্রায় সাত মাস হলো প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ করেননি; তার প্রেস ডিপার্টমেন্টও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে নিজের ছবি সরিয়ে ফেলার কথাও উল্লেখ করেন। সব কনস্যুলেট, দূতাবাস ও হাই কমিশনে রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল। এগুলো হঠাৎ এক রাতের মধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এতে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যায়। মানুষ ভাবতে পারে, রাষ্ট্রপতিকে হয়ত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি খুব অপমানিত বোধ করেছি।

সাহাবুদ্দিন জানান, ছবি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছিলেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রয়টার্স জানায়, রাষ্ট্রপতির মন্তব্য বিষয়ে তারা ইউনূসের প্রেস অফিসের কাছে বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পাননি।

মো. আবদুল হামিদের উত্তরসূরি সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি, যিনি চুপ্পু নামেই বেশি পরিচিত।

ছাত্রজীবনে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি ছিলেন। পরে পাবনা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন। ১৯৭১ সালে তিনি পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতাদখলকারীরা। সাহাবুদ্দিনকেও তখন কারাবরণ করতে হয়েছিল।

পেশায় আইনজীবী মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি করার পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।

২০০১ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তে যে কমিশন গঠন করা হয়েছিল, সাহাবুদ্দিন ছিলেন এর প্রধান।

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব হিসেবে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুদকের কমিশনার ছিলেন। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হন। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে তিনি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন