[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

৬ দিন পর আবার গান করলো সেই জন্মান্ধ পরিবারটি

প্রকাশঃ
অ+ অ-

ছয় দিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চ চত্বরে গান গাওয়া শুরু করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হেলাল মিয়ার পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার সকালে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

জন্ম থেকেই অন্ধ হেলাল মিয়া (৬৫)। তাঁর পরিবারের ১৩ সদস্যের মধ্যে ৯ জনই জন্মান্ধ। মূলত গান গেয়ে পরিবারটির সংসার চলে। প্রায় ৫০ বছর ধরে গানই তাঁদের একমাত্র পেশা। সম্প্রতি কিছু লোকের বাধার কারণে তাঁদের গান থামতে হয়, আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ছয় দিন পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে তাঁরা আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ–সংলগ্ন এলাকায় গান গাইতে শুরু করেছেন।

হেলাল মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রাজঘর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছাড়াও পরিবারের অন্য দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সদস্যরা হলেন হেলালের ছেলে সাদেক মিয়া (৪৫), ফারুক মিয়া (৩০), তারেক মিয়া (২৫) ও বারেক মিয়া (২০), মেয়ে খায়রুন্নেছা (৪০), নাতনি রোকসানা বেগম (১৬), নাতি মোস্তাকিম (১১) ও মুজাহিদ (১০)। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ–সংলগ্ন এলাকায় সপরিবারে গান গেয়ে সংসার চালান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাউলশিল্পী আবুল সরকারের বিচারের দাবিতে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। গত বুধবার দুপুরে কয়েকজন মিছিলকারীরা পৌর মুক্তমঞ্চে গিয়ে হেলাল ও তাঁর পরিবারকে গান গাইতে বাধা দেন এবং ভিক্ষা করে সংসার চালানোর পরামর্শ দেন। এছাড়া, গান গাইলে তাঁদের হারমোনিয়াম, ঢোলসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ভেঙে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। ভয়ে হেলাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ি রাজঘর এলাকায় চলে যান। আয়ের পথ বন্ধ থাকায় তারা কষ্টে দিন পার করছিলেন।

পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা সমাধানের উদ্যোগ নেন। তিনি জেলার আলেম-উলামাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। মাদ্রাসার কোনো শিক্ষার্থী হেলাল ও তাঁর পরিবারকে গান গাইতে বাধা দেবে না বলে আশ্বাস দেন। পরে হাফিজুরকে বিষয়টি জানানো হয়। গতকাল সকাল থেকে তাঁরা সপরিবারে আবার পৌর মুক্তমঞ্চে গান শুরু করেন।

হেলাল মিয়া বলেন, ‘হাফিজুর রহমান মোল্লাসহ বিএনপি কয়েকজন নেতা আমাদের গান গাওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। শঙ্কা থাকলেও গতকাল আমরা গান গেয়েছি।’

হাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘শুনেছি কিছু যুবক তাদের গান গাইতে নিষেধ করেছিলেন। আশা করি, এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন