ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক ভিটার ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলা হচ্ছে
![]() |
| ট্রাক্টরে করে সরিয়ে ফেলা হচ্ছিল ইট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহীর কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে ইট সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার এসব ইট ট্রাক্টরে করে পুকুর ভরাট ও সড়কে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর সংস্কৃতিকর্মীরা। পরে বিকেলে প্রশাসন ইট সরানোর কাজ বন্ধ করে দেয়।
মিঞাপাড়ায় অবস্থিত এই বাড়ি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ভেঙে ফেলা হয়। ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পাশের রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন দাবি করেছিল, তাদের কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী এই কাজ করেছেন। ঘটনার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
বাড়ি ভেঙে ধ্বংসাবশেষের ইটগুলো সেখানে স্তূপ করা হয়। দুই বছর ধরে ৪ নভেম্বর ঋত্বিক ঘটকের জন্মবার্ষিকীতে রাজশাহীর সংস্কৃতিকর্মীরা ওই ইটের ওপর মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ অনুষ্ঠান করে আসছেন। চলতি বছর সেখানে ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষও পালন করা হয়েছে।
আজ বিকেলে ইট সরানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজশাহীর সংস্কৃতিকর্মীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা আহসান কবির, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন, ফুটপ্রিন্ট ফিল্ম প্রোডাকশনের নির্বাহী প্রযোজক অমিত রুদ্র, রাজশাহী মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক আতিকুর রহমান, সংস্কৃতিকর্মী হাসিবুল হাসনাত প্রমুখ।
![]() |
| ধ্বংসাবশেষের স্তূপ থেকে আলাদা করা হয়েছে ইট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রত্যক্ষদর্শী সংস্কৃতিকর্মী হাসিবুল হাসনাত বলেন, ‘আমি বিকেলে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখি, টিনের বেড়া খোলা, ট্রাক্টর ঢুকেছে এবং ঋত্বিক ঘটকের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ সরানো হচ্ছে। আমরা কিছুদিন আগে এখানে শতবর্ষ উদ্যাপন করেছি। অথচ আজ প্রশাসন সেই স্মৃতির শেষ চিহ্নটুকুও রাখছে না।’ তিনি আরও জানান, ট্রাকচালকের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, তিনটি ট্রাক ইটের মধ্যে দুটি ট্রাক একটি পুকুর ভরাটে এবং একটি ট্রাক সড়ক ভরাটে ফেলা হয়েছে।
![]() |
| রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে ইট সরানোর খবর পেয়ে সংস্কৃতিকর্মীরা সেখানে আসেন। মঙ্গলবার বিকেলে নগরের মিঞাপাড়া এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাঁকে জানানো হয়, পরিষ্কারের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আপত্তি জানালে কাজ বন্ধ করা হয়।
রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান বলেন, ইট সরানোর সিদ্ধান্ত কলেজের ম্যানেজিং কমিটি থেকে নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও কলেজের সভাপতি টুকটুক তালুকদার বলেন, ইট ফেলে দেওয়া হচ্ছে না। জায়গাটি পরিষ্কার করার জন্য সাময়িকভাবে সরানো হয়েছিল। পুকুরে ইট ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আপত্তি জানালে কাজ বন্ধ করা হয়েছে এবং আপাতত ইটগুলো সেখানেই থাকবে।



Comments
Comments