[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশঃ
অ+ অ-
রাজশাহীতে ঋত্বিক ঘটকের বসতভিটা সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি সংরক্ষণ ও তাঁর স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংসের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন করেছেন সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্রকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহীতে নাগরিকদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনের শেষ পর্যায়ে পাঁচ দফা দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি আহসান কবীরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদ হোসেন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, ছাত্র অধিকার পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি তাহমিদ জাকি, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহীর সভাপতি উপেন রবিদাস, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য সংগঠন স্বণনের সভাপতি মিজান শেখসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

বক্তারা বলেন, ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি বাংলা চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য। বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে ইট সরিয়ে পুকুর ও ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়েছে, যা ইতিহাস মুছে ফেলার শামিল। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং সরানো ইটগুলো আগের স্থানে ফিরিয়ে এনে বাড়িটি সংরক্ষণ করতে হবে।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি আহসান কবীর বলেন, ‘শহরের বাইরে পুকুরে ও ডোবায় ফেলে দেওয়া ইটগুলো যথাস্থানে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং প্রশাসনকে দ্রুত সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

মানববন্ধন শেষে পাঁচ দফা দাবিতে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে—ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বসতভিটা ভাঙা ও স্মৃতিচিহ্ন সরানোর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; অবশিষ্ট জমি অবমুক্ত করে সংরক্ষণ করতে হবে; হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ইজারা পুনর্বিবেচনা ও বাতিল করতে হবে; সীমানাপ্রাচীর ও সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে এবং ভবিষ্যতে সেখানে ‘ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ ও ‘ঋত্বিক ফিল্ম ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাজশাহীর মিঞাপাড়ায় অবস্থিত ঋত্বিক ঘটকের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে ইট সরিয়ে নেওয়া হয়। ট্রাক্টরে করে ইটগুলো পুকুর ও ডোবায় ফেলা হয়। সংস্কৃতিকর্মীরা বাধা দিলে প্রশাসন কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে গত বুধবার বিকেলে রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে পবা উপজেলার খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় একটি ডোবা ও পুকুরে ওই ইটগুলোর সন্ধান পাওয়া যায়।

রাজশাহীর মিঞাপাড়ায় অবস্থিত বাড়িটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভেঙে ফেলা হয়। ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পাশের রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তখন দাবি করেছিল, তাদের কিছু প্রাক্তন শিক্ষার্থী এই কাজ করেছেন। ঘটনার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও এখন পর্যন্ত সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

বাড়িটি ভেঙে ফেলার পর ধ্বংসাবশেষের ইটগুলো সেখানে স্তূপ করা হয়েছিল। দুই বছর ধরে প্রতি ৪ নভেম্বর ঋত্বিক ঘটকের জন্মবার্ষিকীতে রাজশাহীর সংস্কৃতিকর্মীরা ওই ইটের ওপর মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ অনুষ্ঠান করে আসছেন। চলতি বছর সেখানে ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষও উদ্‌যাপন করা হয়।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন