জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ
![]() |
| বিনম্র শ্রদ্ধা আর গভীর ভালোবাসায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করেন সর্বস্তরের মানুষ। আজ রোববার সকালে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
পুষ্পস্তবকে ছেয়ে গেছে শহীদবেদি। ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা পেশা নির্বিশেষে মানুষ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে স্মরণ করছেন ১৯৭১ সালের ভয়াল ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ।
আজ বুধবার ভোর থেকেই রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জড়ো হতে শুরু করেছেন নানা বয়সী মানুষ। সকাল সাতটায় শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন। শোক, বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসায় সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছেন।
সকাল সাতটার পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে সাধারণ মানুষও সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে প্রবেশ করতে পারেন।
শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী সংগঠন, শ্রমিক ও ছাত্রসংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এছাড়া নতুন প্রজন্মসহ সর্বস্তরের মানুষও স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ছিলেন।
পাঁচ বছর বয়সী নাতিকে নিয়ে স্মৃতিসৌধে এসেছেন ভ্যানচালক এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘নাতিকে এবার স্কুলে ভর্তি করাব। ওকে নিয়ে আসলাম দেখাতে। যেন আমরা যখন থাকব না, তখন ওরা এগুলো ভুলে না যায়।’
মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নওশেদ ইসলাম বাবার সঙ্গে এসেছে। মাথায় বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে বলল, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। তাঁরা না থাকলে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না।’
লালকুঠি এলাকার কবি নজরুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরাও দল বেঁধে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। ষষ্ঠ শ্রেণির আরাব ইসলাম বলেন, ‘শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি বুদ্ধিজীবীদের প্রতি। গত বছরও এসেছিলাম।’
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র করে। তারা তাদের এদেশীয় দোসরদের নিয়ে শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করে। বিশেষ করে ১৪ ডিসেম্বর তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজারের ইটখোলা, মিরপুরের বধ্যভূমিসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে জাতিকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতার পর থেকে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

Comments
Comments