‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান ঘিরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান অচল
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্লোগানকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। অনুষ্ঠানে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেয়ার পর সমস্যা শুরু হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন অনুষ্ঠান স্থগিত করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা পরিষদ চত্বরে সকাল ১১টার পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বছির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস মোছা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। বঙ্গবন্ধুকেই আমরা মানি, জাতির পিতা হিসেবেই মানি। সেদিন রণযুদ্ধে জয় বাংলা ছাড়া অন্য কোনো স্লোগান কি ছিল? এই বাংলাদেশেই মুক্তিযোদ্ধা থাকবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’
বছির উদ্দিনের বক্তব্য শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তি ময়মনসিংহের সংগঠক আল মামুন, গণ অধিকার পরিষদের মুক্তাগাছা উপজেলার সভাপতি শাহীনুর আলমসহ অন্তত ১৫-২০ জন ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। কিছু অংশ মঞ্চেও উঠে প্রতিবাদ শুরু করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণ চন্দ্র অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বছির উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা বলি। নাম বলার পর জুলাই যোদ্ধারা প্রতিবাদ করেন। তাঁরা বলতে থাকেন, বঙ্গবন্ধুর নাম বলা যাবে না।’
জাতীয় যুবশক্তি ময়মনসিংহের সংগঠক আল মামুন বলেন, ‘তিনি শুরু থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু—এসব কথা বলছেন। আমরা কয়েকজন প্রতিবাদ করি। উত্তেজনা বাড়ায় বিষয়টি অন্যভাবে চলে যায়। পরে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধাসহ সবাই চলে গেলে ইউএনও স্যারের কক্ষে আলোচনায় বসা হয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান করি। কোনো মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে আমাদের বেয়াদবি হয়নি। আমাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের জায়গায় মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান দিতে হবে। পরবর্তীতে এমন ব্যক্তিকে আর অনুষ্ঠানে ডাকা হবে না এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’
ইউএনও কৃষ্ণ চন্দ্র বলেন, ‘সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলায় অনেকে আপত্তি তোলেন। ছাত্র প্রতিনিধিরাও মঞ্চে বক্তব্য দেন। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।’

Comments
Comments