সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক প্রাথমিক শিক্ষকদের

আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকেরা আজ শনিবার বিকেলে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে গেলে তাঁদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। লাঠিপেটার পাশাপাশি জলকামান থেকে গরম পানিও ছোড়া হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হওয়ার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী তাঁরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং বিদ্যালয়গুলোতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’–এর নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ আজ শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান।

এর আগে বিকেলে শাহবাগে প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিলে পুলিশ চড়াও হয়। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেডে শতাধিক শিক্ষক আহত হন। শিক্ষকদের অভিযোগ, কোনো উসকানি ছাড়াই পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, শিক্ষকরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে গেলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।

হামলার পরপরই শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, তাঁরা শহীদ মিনারে ফিরে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি। আরও কয়েকটি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ গঠন করে এই আন্দোলন চলছে।

বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা জাতীয় বেতন–স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। সেটি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছেন। তাঁদের অন্য দুটি দাবি হলো শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়া।

কিছুদিন আগে সহকারী শিক্ষকরা বেতন ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন। তবে এখন তাঁরা সেটি আরও এক ধাপ বাড়িয়ে ১০ম গ্রেডে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

এত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ছিল ১১তম গ্রেডে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর রিট করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন এক ধাপ বাড়িয়ে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এতে সারা দেশের প্রধান শিক্ষকদের বেতনও ১০ম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পথ খুলে গেছে।

সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে শিগগিরই সরকারি সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার বিষয়েও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে।