ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর আপত্তির মুখে বাদ প্রাথমিকের সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ
| প্রতীকী ছবি | 
আপত্তির মুখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে সৃষ্টি করা সংগীত শিক্ষক ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাতিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই দুই পদ বাদ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫’-এ কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এসব পরিবর্তন করে মন্ত্রণালয় গত আগস্টে জারি করা বিধিমালাটি সংশোধন করেছে।
আজ সোমবার দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়ের অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান জানান, 'রোববার বিধিমালাটি সংশোধনের গেজেট জারি হয়েছে। গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় চারটি ক্যাটাগরির পদ থাকলেও সংশোধনে দুটি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছে। সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ নতুন বিধিমালায় নেই।' 
সমালোচনার মুখে পদগুলো বাতিল করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, 'আপনারা এটি খতিয়ে দেখতে পারেন।' 
অতিরিক্ত সচিব আরও জানান, বিধিমালায় একটি ‘শব্দগত পরিবর্তন’ও আনা হয়েছে। তিনি বলেন, 'আগের বিধিমালায় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পদগুলোর মধ্যে ২০ শতাংশ পদ বিজ্ঞান বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা এবং বাকি ৮০ শতাংশ পদ অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরা পাবেন বলে উল্লেখ ছিল। এখানে একটি শব্দগত ভুল ছিল। মনে হচ্ছিল ৮০ শতাংশ পদে বিজ্ঞান ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা নিয়োগ পাবেন। কিন্তু আসলে ওই ৮০ শতাংশ পদ ছিল কমন, অর্থাৎ বিজ্ঞান বা অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা নিয়োগ পাবেন।' 
তিনি আরও বলেন, 'বিধিমালার কোটার বাইরের ৮০ শতাংশ পদের ক্ষেত্রে ‘অন্যান্য বিষয়ে’ শব্দবন্ধকে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্তত’ শব্দবন্ধ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।' 
গত ২৮ আগস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি হয়। নতুন বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের দুইটি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবে এরপর ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টি নিয়ে সমালোচনা শুরু করে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিধিমালায় সংগীত শিক্ষকের পদ সৃষ্টির সমালোচনা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেন। একই দিনে এক সেমিনারে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির কঠোর সমালোচনা করেন।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের পদক্ষেপকে ‘ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে হেফাজতে ইসলাম এ সংক্রান্ত বিধিমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন