[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

বিএনপির নির্বাচনী প্রচারে জিয়া-তারেকের ছবি ব্যবহারে আপত্তি এনসিপির

প্রকাশঃ
অ+ অ-
দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে সংলাপে অংশ নেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি। আজ বুধবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিবন্ধন পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রথম সংলাপে অংশ নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সংলাপে দলটি নির্বাচনী আচরণবিধি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ইসির সক্ষমতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিবন্ধিত সাতটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন এনসিপি। এক দিন আগেই নিবন্ধন পাওয়া এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা সংলাপে ছিলেন।

নির্বাচনী আচরণবিধির সাত ধারার চ উপধারাই ইসির ‘প্রথম পরীক্ষা’, এমন মন্তব্য করে এনসিপি নেতা জহিরুল ইসলাম সংলাপে বলেন, ‘বিএনপির বর্তমান প্রধান হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। সে ক্ষেত্রে তারেক রহমানের ছবি যদি বিএনপির কোনো প্রার্থী ব্যবহার করেন, তাহলে কমিশনকে তার ওপর বিধিমালা প্রয়োগ করতে হবে। তখন কমিশনের সক্ষমতা দেখা যাবে।’

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রণীত নির্বাচনী আচরণবিধির চ উপধারায় বলা হয়েছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী কেবল তাঁর বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি ব্যানার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল বা ফেস্টুনে ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য কোনো পোস্টার অনুমোদিত নয়।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের গড়া এনসিপি সংলাপে বলেছে, এই আচরণবিধিমালা বাংলাদেশের নির্বাচনী সংস্কৃতি ও উৎসবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

জহিরুল ইসলাম বলেন, বিধিমালার মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী ঐতিহ্যকে অস্বীকার করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কাপড় এবং চটের তৈরি ব্যানার করতে হবে। দেশে চটের ওপর প্রিন্ট দেওয়ার কত প্রতিষ্ঠান আছে? প্রত্যন্ত এলাকায় এই সুযোগ আরও কম।

আচরণবিধিতে সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে শব্দের সর্বোচ্চ মাত্রা ৬০ ডেসিবেল হতে পারবে। জহিরুল প্রশ্ন তোলেন, ‘কয়জনের কাছে এই যন্ত্র আছে? অভিযোগ কার কাছে জানাতে হবে, সে বিষয়ও স্পষ্ট নয়।’

জহিরুল আরও বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে সংক্ষুব্ধ কেউ তদন্ত কমিটিকে অভিযোগ দিতে পারবেন, কিন্তু আইনের সংজ্ঞায় তদন্ত কমিটি নির্ধারিত নয়। প্রক্রিয়াটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সবাই নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়, কিন্তু বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে যদি কমিশনের কর্মকর্তা ব্যবস্থা না নেন, তার বিরুদ্ধে করণীয় কী হবে, তা স্পষ্ট নয়।

তিনি মনে করেন, এই আচরণবিধির মাধ্যমে কিছু প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

আচরণবিধির ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসার একই মঞ্চে সব প্রার্থীর উপস্থিতিতে নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ এবং আচরণবিধি প্রতিপালনের ঘোষণা দিতে পারবেন। ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী বা দলের প্রতিনিধি টেলিভিশন চ্যানেল আয়োজিত সংলাপে অংশ নিতে পারবেন, তবে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিতে পারবেন না।

এ দুটি ধারার জন্য সাধুবাদ জানিয়ে এগুলো বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান জহিরুল ইসলাম।

নির্বাচনী ব্যবস্থায় সহিংসতার প্রভাবও উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো দলের অভ্যন্তরীণ সহিংসতায় কেউ নিহত বা আহত হলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার বিধান যুক্ত করা উচিত।

ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গণভোটের প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা কবে নাগাদ পাওয়া যাবে, সংলাপে তা জানতে চান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি কমিশন স্বতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখে এবং সংবিধানের প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, তাহলে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত না করে, এনসিপি নির্বাচন কমিশনকে শতভাগ সহযোগিতা করবে।

তিনি জোটের প্রার্থী নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এই সংশোধনকে সাধুবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্তে অনড় থাকার আহ্বান জানান।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন