সুন্দরবনে শিকার নিয়ন্ত্রণে বসানো ক্যামেরা ভাঙল দুর্বৃত্তরা
| সুন্দরবনে হরিণের পাল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
সুন্দরবনে বাঘ ও হরিণ শিকার ঠেকাতে সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে বসানো নজরদারি ক্যামেরার একটি ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সুন্দরবনের অপরাধপ্রবণ ২৪টি স্থান চিহ্নিত করে ক্যামেরা ট্র্যাপ বসানো হয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরার নোটাবেঁকিতে স্থাপন করা দুটি ক্যামেরার একটি ভাঙার কথা নিশ্চিত করেছে বন বিভাগ।
বন বিভাগের সূত্র জানায়, পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ২৪টি স্থানে ২৪টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। অরণ্যক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় বিভিন্ন ক্যাম্প ও স্টেশনের এলাকার গাছে এ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। সাতক্ষীরা রেঞ্জে কোবাদক ও পুষ্পকাটিতে দুটি করে এবং দোবেকিতে ছয়টি—মোট ১০টি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের বিভিন্ন ক্যাম্প ও স্টেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসানো হয়েছে বাকি ১৪টি ক্যামেরা। সাতক্ষীরা রেঞ্জের বনভূমির আয়তন ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৩১ হেক্টর। বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক, কৈখালি ও কদমতলা—এই চারটি স্টেশনের অধীনে রয়েছে ১০টি প্যাট্রোল ক্যাম্প।
নির্দিষ্ট মৌসুমে সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণের অনুমতি দেওয়া হলেও অনেক জেলে সেই সুযোগে বনের গভীরে ঢোকেন। কেউ অনুমতি নিয়ে, কেউ আবার অনুমতি ছাড়াই মাছ-কাঁকড়া ধরার নামে প্রবেশ করে বন্য প্রাণী, বিশেষ করে হরিণ শিকার করেন। কারা কোন পথ দিয়ে বনাঞ্চলে ঢুকছেন, তা শনাক্ত করতে রাখা হয়েছে এসব গোপন ক্যামেরা—জানিয়েছে বন বিভাগ।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৯১১টি হরিণের ফাঁদ এবং ৪৫ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করা হয়েছে। রেঞ্জ কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশনের অন্তর্গত অনেক জায়গা খুব দুর্গম। যৌথ অভিযান ছাড়া শিকারি ও বনদস্যুর কার্যক্রম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাই হরিণ ও বাঘ শিকার ঠেকাতে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের ওপর গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে।
ফজলুল হক আরও বলেন, নোটাবেঁকিতে বসানো দুটি ক্যামেরার একটি নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দুর্বৃত্তরা ভেঙে দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দুই মাস পর পর ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন