বিদেশ নেওয়ার মত অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া: ফখরুল
![]() |
| মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সব ব্যবস্থা করা হলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থা সেই ধরনের যাত্রা সামলানোর উপযুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে, আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়া বিদেশে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থায় নেই। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে এবং তখন বিদেশে নেওয়া সম্ভব কি না দেখা হবে।
এর আগে দুপুরে খালেদা জিয়ার ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তাঁর পরিবার। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাঁকে বিদেশে নেওয়া হবে।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতা সহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। গত রোববার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তিনি এখন হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রয়েছেন। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। গতকাল রাতে তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল জানান, দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আমেরিকার জনস হপকিনস হাসপাতালের চিকিৎসক এবং লন্ডনের একটি ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। গতকাল রাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করে মেডিকেল বোর্ড জানায়, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন।
শারীরিক সামর্থ্যের কারণে বিদেশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত না হলেও, সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই চলছে।
ফখরুল বলেন, বিদেশে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা, সম্ভাব্য দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে। কাজ এগিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে প্রয়োজন হলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের ভিড় না করারও অনুরোধ জানান তিনি।
বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যাপন কমিটি সংবাদ সম্মেলনে দলের নেত্রীর শারীরিক অবস্থা ও বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সেই সময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে না ফেরার কারণ নিয়েও সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন।
তারেক রহমানের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, উনি নিজে একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন।’
সাংবাদিকরা পুনরায় প্রশ্ন করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি ব্যাখ্যা দিতে পারব না। উনি দলের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান, আমার নেতা, দলের প্রধান। পোস্ট দিয়েছেন, এটাকে আপনারা ধরে নিন তাঁর ভাষ্য। আর কোনো ব্যাখ্যা প্রয়োজন নেই।’
মায়ের অসুস্থতার মধ্যে তারেক রহমান আজ একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তাঁর দেশে ফেরার বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ তাঁর একার হাতে নেই।

Comments
Comments