ঐকমত্য কমিশনে আপ্যায়ন ব্যয় কত, ব্যাখ্যা দিল সরকার
| প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় |
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ব্যয় নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরো কমিশনের ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, যার মধ্যে আপ্যায়নে খরচ হয়েছে মাত্র ৪৫ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়, সম্প্রতি কিছু মহল দাবি করছে-কমিশন আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকা খরচ করেছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
পোস্টে বলা হয়, এটি একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার। যারা এই প্রচারণা চালাচ্ছে, তারা কমিশনের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেনি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তথ্য যাচাইও করেনি।
কমিশনের দেওয়া তথ্যমতে, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর ২০২৪–২৫ ও ২০২৫–২৬ অর্থবছরে কমিশনের মোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এর মধ্যে আপ্যায়নের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, খরচ হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
কমিশন জানায়, আপ্যায়নের বড় অংশ ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ও কমিশনের বিভিন্ন সভায়। তিন ধাপের আলোচনায় প্রতিদিন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রথম ধাপে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৪৪টি বৈঠকে খরচ হয় ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ধাপে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ২৩টি বৈঠকে খরচ হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। এসব বৈঠক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলত, ফলে নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে হতো। গড়ে প্রতিদিন ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকারও কম। তৃতীয় ধাপে ৭টি বৈঠকে খরচ হয় ৭ লাখ ৮ হাজার টাকা।
এ ছাড়া কমিশনের নিজস্ব ৫০টি সভায় ব্যয় হয় ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনা, তিনটি সংবাদ সম্মেলনসহ মোট ১৩টি অনুষ্ঠানে খরচ হয় ২ লাখ টাকা।
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ১৪টি বৈঠকে আপ্যায়নে ব্যয় হয় ৩০ হাজার টাকা, যেখানে বিশেষজ্ঞরা কোনো সম্মানী নেননি। ৯ মাসে অতিথি আপ্যায়নে খরচ হয়েছে আরও ২ লাখ টাকা, যাতে দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি, কূটনীতিক, রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের আপ্যায়ন অন্তর্ভুক্ত।
কমিশনের মতে, এই বিশদ হিসাবই প্রমাণ করে ৮৩ কোটি টাকার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কমিশনকে হেয় করার একটি পরিকল্পিত চেষ্টা।
কমিশন আশা প্রকাশ করেছে, যারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে, তারা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইবে। একই সঙ্গে কমিশন গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—সঠিক তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন