গোয়েন্দা টিম গঠন করেন, আমি লোক সাপ্লাই দেব: ওসিকে জামায়াতের প্রার্থী

চট্টগ্রামের মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমানের সঙ্গে থানায় কথা বলেছেন চট্টগ্রাম-১ আসনে (মিরসরাই) জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী সাইফুর রহমান (মাঝে) | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

‘আপনি যদি লজিস্টিক সাপোর্ট চান, আপনার পুলিশের সঙ্গে সহকারী হিসেবে যদি মনে করেন সহায়ক পুলিশ লাগবে, আমি শিগগিরই শিবির–জামাতের লোক দেব। যদি আপনারা মনে করেন গোয়েন্দার লোক লাগবে, আপনি ইউনিয়নভিত্তিক গোয়েন্দা টিম গঠন করেন, আমি বিশেষভাবে লোক সরবরাহ দেব।’

এই কথা বলেন চট্টগ্রাম–১ (মিরসরাই) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান। তিনি মিরসরাই থানায় বসে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমানকে উদ্দেশ করে এসব কথা বলেন। সম্প্রতি তাঁর কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওটি ২০ নভেম্বর বিকেলে মিরসরাই থানা থেকে ধারণ করা হয়। মিরসরাইয়ে ডাকাতি বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এ প্রস্তাব দেন।

ওসিকে সাইফুর রহমান বলেন, ‘মিরসরাইতে ক্রমাগত ডাকাতি বাড়ছে। যদি আমরা দু–একজন ডাকাতকে হাতেনাতে ধরতে পারতাম, শাস্তি দিতে পারতাম, মানুষের নজরে আনতে পারতাম, তাহলে সবাই মনে করত বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

কার্যকর উদ্যোগ নিলে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা কী কাজ করছেন, আপনাদের টিম কোথায়—এসব বিষয়ে আপনার বক্তব্য আসা দরকার। আমরা সত্যিকারে সহযোগিতা করতে চাই। এখন আমরা তো আর ডাকাত ধরতে ঘরে ঘরে যেতে পারি না। উল্টো আমাদেরই ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করবে।’

ভিডিওতে কথা বলতে শোনা যায় ওসি আতিকুর রহমানকেও। তখন তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের আপনাদের সহযোগিতা দরকার। অন্তত ১৫ দিন সহযোগিতা করুন, দেখুন কী ফল আসে। আপনি যেটা আগে বললেন, আমি তাতে খুব খুশি হয়েছি। আপনাদের সমাজসেবীরা পাড়া–মহল্লায় টিম করে দিন, আমরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করব। এতে আমার পুলিশ যুক্ত থাকবে। আমি সরাসরি তদারকি করব, নিরাপত্তাও দেব।’

ওসির সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে জানতে চাইলে সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমার বলা কথাগুলো আগে–পরে কেটে ছড়িয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল প্রচার করছে। যারা কথার বিকৃতি ছড়াচ্ছে, তারা ডাকাতদের সহায়ক। কয়েকটি আইডি থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে—তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করব।’

মিরসরাই থানার ওসি আতিকুর রহমানের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি জানান যে তিনি জরুরি সভায় ব্যস্ত—পরে কথা বলবেন। তবে এরপর আর তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে এভাবে আচরণ করা যায় না, কেউ এভাবে কথা বলতে পারেন না।