[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিলেই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশঃ
অ+ অ-
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

আসন্ন নির্বাচনে পুলিশকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কেউ কোনো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে এ হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এর আগে দেড় ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলার অবস্থা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য এবং লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

নির্বাচনে যদি পুলিশ কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা দেয়, তখন কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি করেছি। কারও কোনো ধরনের দায়িত্বহীনতা ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আগে জিডি করা হতো, এবার সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশের প্রতি আমার নির্দেশনা, নির্বাচন হবে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর। কেউ অনৈতিক কাজে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’

বিগত নির্বাচনে যেসব ওসি বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের অনেকেই এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের থানায় দায়িত্বে আছেন। তাঁদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না—এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বলেছি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের অধিকাংশকে পরিবর্তনের চেষ্টা করব। তবে আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সবাইকে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। প্রথমে যাদের তিনটি নির্বাচনে জড়িত ছিল, তাদের বাদ দেব। তারপর দুইটির সঙ্গে জড়িতদের, এরপর একটির সঙ্গে জড়িতদের। যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, তাদের কাজে লাগাতে হবে।’

জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশের বাইরে পালিয়ে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের বাইরে যাঁরা আছেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

দেশকে বিশৃঙ্খল করার চেষ্টা হচ্ছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য প্রকাশ করা হচ্ছে।

নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধার বিষয়ে রাউজানে অভিযান চালিয়ে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের তথ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাউজান, ফটিকছড়ি একটু কঠিন এলাকা। আগেও ছিল, এখনো কঠিন। এসব এলাকায় অপরাধীরা অপরাধ করার পর পাহাড়ে চলে যায়। এখানে সমতল এলাকার মতো নয়।’

নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী বিচারিক ক্ষমতা রাখবে কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা এখনই আছে। নির্বাচনের সময় তা বন্ধ হবে কেন? আমরা বন্ধ করছি না। নির্বাচন আসুক, তখন জিজ্ঞেস করুন।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গত ১৪ মাসে ৪০টির মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তথ্য পাওয়া গেছে। কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত—এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী বা যেকোনো বাহিনী যেভাবেই হোক না কেন, প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে ফয়সালা করা হবে।’

বৈঠকে পুলিশ কমিশন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানালেও তিনি বলেন, পুলিশ কমিশন হবে।

বিমান বন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর সেখানকার সুরক্ষিত ভল্ট ভেঙে অস্ত্র চুরি হয়েছে কি না—এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ড তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার–পাঁচটি দেশে তদন্তের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। দু-একটি দেশের বিশেষজ্ঞ এসেছেন। তদন্ত শেষে জানা যাবে, চুরি হয়েছে কি হয়নি। যদি চুরি হয়ে থাকে, কার মাধ্যমে হয়েছে, কে দায়ী, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ 

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন