[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

শাহবাগে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে শিক্ষকদের ওপর চড়াও পুলিশ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ঢাকার রাজপথে আবারও শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়েছে পুলিশ। এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁরা বেতন–গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে। এতে শতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, কোনো উসকানি ছাড়াই পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, শিক্ষকরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যেতে চাইলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। শিক্ষকদের হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

এর আগে গত অক্টোবর মাসেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দাবি আদায়ে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তখনও পুলিশের লাঠিপেটায় সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা এবার তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের দাবি—সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি দেওয়া এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। বিকেলে তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাত্রা করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

শিক্ষকদের ভাষ্য, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা ও প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের দাবিতে ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচি ছিল তাঁদের। গণগ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাঁদের আটকে দিলে তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে, এরপর লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে।

বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশ চড়াও হতে গেলে বাধা হয়ে দাঁড়ান এক শিক্ষক। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক রক্তাক্ত হয়েছেন। দুজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।’

পুলিশের হামলায় আহত শতাধিক শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন। আহতদের মধ্যে নারী শিক্ষকরাও আছেন।

পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে শামছুদ্দীন বলেন, ‘আমরা এখন শহীদ মিনারে অবস্থান করব। আরও কঠোর কর্মসূচি দেব।’

শিক্ষকদের ওপর হামলার বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, শিক্ষকরা যমুনার দিকে যেতে চাইলে পুলিশ শাহবাগে ব্যারিকেড দেয়। তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২–১ জনকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শাহবাগে পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন এমন শতাধিক শিক্ষক | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বিকেল চারটার এই ঘটনার এক ঘণ্টা পর ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পুলিশের পদক্ষেপের একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, শহীদ মিনার থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কিছু আন্দোলনকারী ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচির নামে শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হয়। আনুমানিক চারটার দিকে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে একটি দল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড় পেরিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দিকে এগোতে চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে আন্দোলনকারীরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে।

শিক্ষকদের বাধা দেওয়ার কারণ হিসেবে পুলিশ জানায়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সামনে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছিল।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন