[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

রাজশাহীতে আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

রাজশাহীতে আর্থিক অনিয়ম ও অসদাচরণসহ একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্যাডে লিখিতভাবে তিনি জানান, আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব ছাড়বেন।

এর আগে সকালে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একযোগে আন্দোলনে নামেন। সহকর্মী শিক্ষকেরা সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে ধরেন। একই সময়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সহকারী শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক একরামুল হক শিক্ষার্থী ভর্তি ফি, বিদ্যালয়ের পুকুর ইজারা এবং বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়কে পরীক্ষাকেন্দ্র বা ভেন্যু হিসেবে ভাড়া দেওয়ার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কোচিং করানোর কথা বলে ৪০ হাজার টাকা আদায় করেও কোচিং না করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তিনি ক্রয় কমিটিকে পাশ কাটিয়ে এককভাবে বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটা করেছেন এবং এক নারী সহকর্মীর বিষয়ে অশালীন মন্তব্য করেছেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, একরামুল হক রাজশাহীতে কর্মরত থাকলেও নওগাঁর একটি স্কুলের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নওগাঁয় ইউপি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রচার চালিয়েছেন। ব্যবস্থাপনা কমিটির ভোটার তালিকা জালিয়াতির মতো গুরুতর অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে।

সহকারী শিক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি সবাই জানে। শিক্ষার্থীরাও ক্ষুব্ধ। কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও কোনো প্রতিকার পাইনি। তাই আমরা তাঁর পদত্যাগ চাই।’

শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনের সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং কয়েক দফা কক্ষ অবরুদ্ধ রাখেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে দুপুরে মো. একরামুল হক পদত্যাগের লিখিত ঘোষণা দেন।

ঘোষণাপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মো. একরামুল হক স্বেচ্ছায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করব। আমি এটি স্বজ্ঞানে ও কারও প্ররোচনা ছাড়া করেছি।’

পদত্যাগের ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।

প্রধান শিক্ষক একরামুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাকে ঘেরাও করে রেখেছিল, কোনো সহকর্মী এগিয়ে আসেননি। চাপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছি। এখানে কাজের পরিবেশ নেই, সবাই আমার বিরুদ্ধে। আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা।’

তিনি আরও জানান, অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে বদলি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন এবং বিষয়টি বিদ্যালয়ের সভাপতিকে জানাবেন।

বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের একটি অভিযোগ আগে থেকেই তদন্তাধীন আছে। তবে আজকের বিক্ষোভ বা পদত্যাগের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেব।’

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন