[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আজ অবরোধ

প্রকাশঃ
অ+ অ-
আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ। শাহবাগ, ঢাকা। ২৫ নভেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৯ জন আহত হয়েছেন বলে আন্দোলনকারীরা জানান। একই দাবিতে তাঁরা আজ বুধবার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন বলেও জানিয়েছেন।

আন্দোলনকারী প্রার্থী রাজিকুল ইসলাম রাত সাড়ে ৯টার দিকে বলেন, ‘আমরা আজকের কর্মসূচি শেষ করেছি। আগামীকাল আবারও অবরোধ করব। একই সঙ্গে ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেব। পিএসসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই। তিনি আমাদের সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ করছেন। পুলিশের লাঠিপেটায় ৯ জন আহত হয়েছে।’

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি। তাই পরীক্ষা পিছিয়ে ‘যৌক্তিক সময়ে’ নেওয়ার দাবিতে তাঁরা প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থানের পর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। ২২ ও ২৩ নভেম্বর রাজশাহীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়মনসিংহে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে কয়েক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এর ধারাবাহিকতায় আজ ঢাকায়ও কর্মসূচি পালন করা হয়।

আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ২৫ নভেম্বর  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রার্থীদের এমন অবস্থানের পর গত রোববার পিএসসির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘লিখিত পরীক্ষা শুরুর তারিখটি আগেই জানানো হয়েছিল। অনেক আগে এই বিসিএসের রোডম্যাপ (পরিকল্পনা) প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতিও শেষ। এখন তা পেছানো সম্ভব নয়।’

আজকের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। বেলা একটার দিকে তাঁরা সেখান থেকে পদযাত্রা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে রওনা দিলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। সেখানে তাঁরা পুলিশকে ফুল দেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের যেতে বাধা দিলে তাঁরা বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় শাহবাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথ পুলিশ বন্ধ করে দিলে আশপাশের সড়কে যানজট তৈরি হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ‘যমুনা’র দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। আন্দোলনকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং জলকামান থেকে পানি ছোড়ে। আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করেন। এরপর আন্দোলনকারীরা শাহবাগেই অবস্থান নেন।

আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ জলকামান থেকে পানি ছোড়ে। ২৫ নভেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পুলিশের লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। এ বিষয়ে চাকরিপ্রার্থী রাজিকুল বলেন, ‘পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানাতে আমরা যমুনার দিকে যাচ্ছিলাম। পুলিশ আমাদের লাঠিপেটা করে। জলকামান থেকে পানি ছোড়ে। সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে আছে।’

পুলিশের লাঠিপেটায় ৯জন আহত হয়েছে বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন। ২৫ নভেম্বর | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

এদিকে শাহবাগে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের ওপর পুলিশের বলপ্রয়োগের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে ডাকসু বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহিংসতা এড়িয়ে চলতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে অযৌক্তিক বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। ধাওয়া, লাঠিপেটা বা অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে এবং গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ধরনের আচরণ ভবিষ্যতেও কোনো অবস্থাতেই পুনরাবৃত্তি করা যাবে না।

চলমান পরিস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানানো হয় সরকার ও আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন