তৃতীয় মেয়াদে জামায়াত আমিরের শপথ নিলেন শফিকুর

তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে শপথ নিয়েছেন শফিকুর রহমান। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে | ছবি: জামায়াতে ইসলামীর সৌজন্যে

টানা তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে শপথ নিয়েছেন শফিকুর রহমান। তিনি নতুনভাবে ২০২৬–২০২৮ মেয়াদের জন্য আমির হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন।

জামায়াতের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম  শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে শপথপাঠ করান। শপথ গ্রহণ উপলক্ষে রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শফিকুর রহমান বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো রাজনৈতিক বিভাজন আর মেজরিটি এবং মাইনোরিটির কোনো সংঘাত আমরা আর দেখতে চাই না।’

উন্নত দেশগুলোতে মেজরিটি-মাইনোরিটি বলে কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা একত্রিত, ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মধ্যেও পরিকল্পিতভাবে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে, যাতে মানুষকে মুখোমুখি রাখা যায়। আমরা তা মানি না, মানতে চাই না।’

তিনি আরও বলেন, বিগত সরকার জামায়াত নেতাদের ওপর অন্যায়-জুলুম চালিয়েছে। ‘জেলখানা ছিল আমাদের প্রথম বাসস্থান। বারবার আমাদের আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে সত্যিকারের কোনো অভিযোগ ছিল না। অভিযোগ একটাই—আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতাম। কিন্তু সেই প্রতিবাদও স্বচ্ছন্দে করতে পারিনি। আমাদের ওপর নানাবিধ অপশাসন, কালো আইন ও হুকুম চাপানো হয়েছিল।’

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমির বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে এই দায়িত্বের জন্য যোগ্য মনে করি না। এই সংগঠনে দীর্ঘ সময় ধরে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের হাতে তৈরি হওয়া মানুষের মধ্যে আমার চেয়ে অনেক যোগ্য, দক্ষ ও অভিজ্ঞ সহকর্মী রয়েছেন। তারপরও আমি জানি না কেন সম্মানিত সদস্যবৃন্দ আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন।’

গত ৯ থেকে ২৫ অক্টোবর সদস্যদের গোপন ভোটের মাধ্যমে জামায়াতের ২০২৬–২০২৮ মেয়াদের আমির নির্বাচিত হন। এতে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৯২ জন রুকন ভোট দেন। সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো আমির নির্বাচিত হন শফিকুর রহমান।

শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ এবং কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।