[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

মানুষ নির্বাচন চায়, তবে আস্থার ঘাটতি রয়েছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

প্রকাশঃ
অ+ অ-
রংপুরে নাগরিক প্লাটফর্মের আঞ্চলিক প্রাক নির্বাচনী পরামর্শ সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আজ শনিবার নগরের আরডিআরএস মিলনায়তনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

দেশের সবাই নির্বাচন চায়। তবে নির্বাচন কমিশন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি, এমন মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

আজ শনিবার রংপুর নগরের আরডিআরএস মিলনায়তনে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত প্রাক্‌-নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও দাবিগুলো তুলে ধরতেই এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া পরামর্শ সভা চলেছে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। এতে ‘নির্বাচিত পরবর্তী সরকারের কাছে কী প্রত্যাশা’ এবং ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কী প্রত্যাশা’ শিরোনামে মুক্ত আলোচনা হয়েছে। সভায় রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহী। দেশের পেশাজীবী, বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও বিদেশিরাও নির্বাচন চান। তবে মানুষের আস্থার ঘাটতি আছে। তারা ভাবছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, নির্বাচনের পথে সহিংসতা বাড়বে কি না এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা যথেষ্ট কি না। তিনি বলেন, ‘এভাবে একদিকে প্রচণ্ড প্রত্যাশা, অপরদিকে আস্থার অভাব—দুইয়ের মধ্যে আমরা অবস্থান করছি।’

নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।’

দূর্নীতি ও প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে তিনি টিআইবির বিবৃতি উল্লেখ করে বলেন, ‘ইফতেখার ভাই আজ মারাত্মক কথা বলেছেন। উনি বলেছেন, “ক্যাবিনেটে সাতজন উপদেষ্টা এর বিরোধিতা করেছেন।” আমরা বাইরের মানুষ কিছুটা জানি। এটি হতাশাজনক। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারের ভেতরে সংস্কারবিরোধী মনোভাব ক্রমান্বয়ে প্রকাশ পাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানের শুরুতেই অনলাইনে ‘নির্বাচন–পরবর্তী সরকারের কাছে কী প্রত্যাশা’ এবং ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কী প্রত্যাশা’ নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। অংশগ্রহণকারীরা অনলাইনে জবাব দেন। এতে জবাবদিহি, নিরপেক্ষতা, দুর্নীতি দূর করা, নির্বাচন কমিশনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখা, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ নানা বিষয় উঠে আসে। পরে এই মতামত অন্য পাঁচটি বিভাগের পরামর্শ সভার সঙ্গে মিলিয়ে দেখানো হয়।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সভায় উপস্থিত সবার উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা আছে কি না। অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী জানান, তারা মনে করেন নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করা কঠিন এবং কমিশনের প্রতি আস্থা নেই।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি ফখরুল আনাম বলেন, জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো এখনও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা রাখে না। ভোটের দিন নিরাপদে ভোট দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা আছে। নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড ও সমন্বয় যথেষ্ট হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, ভোটের আচরণবিধি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ আছে। যারা চাপ প্রয়োগ করে, তাদের ক্ষেত্রে কমিশন নরম আচরণ করে।

 

গণ অধিকার পরিষদের প্রতিনিধি জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘আমরা রকিব-হুদা কমিশনের মতো নির্বাচন কমিশন চাই না। যারা দায়িত্ব পালন করতে পারবে, শুধু তাদেরকেই মানুষের আস্থা থাকবে এবং ভোটে আগ্রহী হবে।’

সিপিবির মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাতুজ্জামান বলেন, ‘সবাই নির্বাচন চায়। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু এখনো আস্থার পরিবেশ তৈরি হয়নি। জনগণের মধ্যে সন্দেহ ও সংশয় রয়েছে।’ এই সময়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি উপেন, হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি আনোয়ার ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ বক্তব্য দেন।

সভা শেষে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রত্যাশা ও আগামী নির্বাচিত সরকারের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা জানার জন্য সারা দেশের মানুষকে শোনা হচ্ছে। মানুষ নির্বাচন ও কমিশনের প্রতি আস্থা কম রাখছে। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, হতাশার সঙ্গে চলা যাবে না।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন