[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

সংগীত ও শারীরিক শিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগ চাইছে প্রাথমিকের ১৯টি সংগঠন

প্রকাশঃ
অ+ অ-
বিবৃতি | প্রতীকী ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি রক্ষা আন্দোলনে যুক্ত ১৯টি সংগঠন। তারা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

মঙ্গলবার সংগঠনগুলোর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ মহলের চাপে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দুই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের গেজেটকৃত সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিশুর সব দিকের বিকাশের জন্য শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতি ও শরীরচর্চার যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, তা বিশ্বের শিক্ষাবিদ ও মনস্তত্ত্ববিদেরা দীর্ঘ গবেষণা ও পর্যবেক্ষণে প্রমাণ করেছেন। তাই যৌক্তিক কারণে গত ২৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। ২ নভেম্বর সেই প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হয়, যা একটি আত্মঘাতী ও পিছিয়ে যাওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। এটি শুধু শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ জাতি গঠনে বাধা নয়, বরং মনন-বোধ-বিবেকহীন রোবট প্রজন্ম গড়ার ভয়ংকর চেষ্টার কাছে মাথা নত করার মতো।

বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষায় এগিয়ে থাকা জাপান, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড এবং মুসলিম অধ্যুষিত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, কাতার, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়ায় সংগীত, চারুকলা ও শরীরচর্চাকে প্রাথমিক স্তরে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে এই উল্টো পথে হাঁটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

অবিলম্বে সংগীত এবং শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাতিল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে আগের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহালের দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। পাশাপাশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় স্তরেই সংগীত, চারুকলা ও শারীরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিদাতা জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি রক্ষা আন্দোলনে যুক্ত সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী (একাংশ), রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা, সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদ, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, নবান্ন উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদ, বসন্ত উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদ, রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র, শিল্পকলা বিদ্যালয় জোট, বাংলাদেশ বাউল ও লোকশিল্পী সংস্থা, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, ভয়েস অব আর্টিস্ট, প্রাচ্যনাট, বিশ্ববীণা, আনন্দন ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’-এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এতে অন্যান্য বিষয়বস্তুর পাশাপাশি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছিল। এরপর ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন সভা, সেমিনার, বিক্ষোভ সমাবেশে সংগীত শিক্ষকের বদলে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের দাবি করেন। সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল না করলে তাঁরা আন্দোলনেরও হুমকি দেন।

এরপর ২ নভেম্বর ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা’ পরিবর্তন করে সরকার। সংশোধিত বিধিমালায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দিয়ে গেজেটে প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় চার ধরনের শিক্ষকের কথা বলা ছিল। সেগুলো ছিল প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক (সংগীত) ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা)। সংশোধিত বিধিমালায় কেবল প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে।

একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন