জাবি ক্যাম্পাসে সাইকেল চুরি বেড়েই চলেছে, শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | ফাইল ছবি |
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে সম্প্রতি সাইকেল চুরির ঘটনা বেড়ে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক সাইকেল চুরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় চোরচক্র আরও সক্রিয় হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আবাসিক হল, অনুষদ ভবন, ক্যাম্পাসের প্রবেশপথ, শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাইকেল চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের অবহেলা এবং নড়বড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭তম শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইসা রুহুলুল্লাহ বলেন, 'গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাগরিবের নামাজের সময় শহীদ সালাম-বরকত হল মসজিদের পাশে থেকে আমার সাইকেলটি চুরি হয়ে গেছে। জাকসু ভিপি, সদস্যবৃন্দ ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, যেন আর কারও সাইকেল হারাতে না হয়। কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হোক।'
একই দিনে ডেইরিগেট এলাকায় আরও একটি সাইকেল চুরি হয়। আইআইটি ৫০তম শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রকিবুল হাসান কনক বলেন, 'সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিটে আমি রক্তদান করতে পান্থপথ যাই। সাইকেলটি ডেইরিগেটে রেখে যাই। রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ফিরে এসে দেখি সাইকেলটি নেই। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরকে শনাক্ত করতে পারি। সে তারামন বিবি হল থেকে বের হয়ে টারজান, ডেইরিগেট, ছবিচত্বর, ওয়াজেদ মিয়া ভবন পেরিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেন হয়ে এমএইচ গেট দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ে।'
কনক আরও অভিযোগ করেন, 'ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ সিসিটিভি ফুটেজ অস্পষ্ট। অনেক ক্যামেরা আলোয়ের সামনে বসানো, তাই চেনা যায় না। মেয়েদের হলের আশপাশের অনেক ক্যামেরাও বন্ধ থাকে। জিজ্ঞেস করলে বলা হয়, মেরামতের জন্য বন্ধ করা হয়েছে, কিন্তু দিন পেরিয়েও চালু হয়নি। এত বড় ক্যাম্পাসে সাইকেল রাখার নিরাপদ জায়গা নেই।'
এর আগে, ৪ অক্টোবর রাতে সালাম-বরকত হল মসজিদের সামনের দিকে থেকেও এক সাইকেল চুরি হয়। আইন ও বিচার বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈয়দ বখতিয়ার খিলজি বলেন, “আমি এশার নামাজে ছিলাম। ফিরে এসে দেখি সাইকেলটি নেই।”
শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিনিয়ত এই ধরনের ঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
নিরাপত্তাহীনতার কারণে কেউ কেউ সাইকেল ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা
প্রশাসনের কাছে দ্রুত সিসিটিভি ক্যামেরা মেরামত এবং নিরাপদ সাইকেল পার্কিং
জোন স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, 'আমরা ক্যাম্পাসের সব সিকিউরিটি গার্ডকে নির্দেশ দিয়েছি, কেউ যাতে সাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে না পারে এবং বাইরে যাওয়ার সময় পরিচয়পত্র দেখানো হয়।'
ক্যাম্পাসের নষ্ট বা অচল সিসি ক্যামেরা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ক্যাম্পাসের কোনো সিসি ক্যামেরা নষ্ট নয়, সব ঠিক আছে।'
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন